ভারতীয় সমাজে বর্ণ ও জাতিব্যবস্থার সূত্রপাত প্রথম কবে হয়েছিল তা সঠিকভাবে জানা যায় না। মূলত বৈদিক আর্য সমাজে বর্ণ বা জাতি প্রথার প্রচলন লক্ষ করা যায়। কেউ কেউ মনে করেন যে, ভারতে আগমনের পূর্বেও আর্য সমাজে এই ব্যবস্থার অস্তিত্ব ছিল।
ভারতের বর্ণভেদ ব্যবস্থা:ভারতবর্ষে আর্যদের প্রবেশের সময় সমাজে বর্ণভেদ ও জাতিপ্রথার অস্তিত্ব সম্পর্কে ঐতিহাসিক মহলে একাধিক বিতর্ক ও মতামতের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে মনে করেন, ভারতে বসবাসকারী অনার্যদের সঙ্গে নিজেদের পার্থক্য সুনিশ্চিত করতে আর্যরা বর্ণভেদের ধারণা চালু করেছিল। আবার একদল ঐতিহাসিকের মতে, ইন্দো-ইরানীয় পর্বে আর্য সমাজে বর্ণভেদের সূচনা হয়।
ভারতের বর্ণভেদ ব্যবস্থা কারণ:
আর্য সমাজে বর্ণব্যবস্থা বা বর্ণভেদ প্রথা গড়ে ওঠার পিছনে দুটি মুখ্য কারণের উল্লেখ করা হয়।
যথা—
চতুর্বর্ণের নির্দিষ্ট কার্যাবলি:
আর্য সমাজে গড়ে ওঠা চতুর্বর্ণ ব্যবস্থায় প্রতিটি বর্ণের জন্য পৃথক পৃথক পেশা নির্দিষ্ট করা হয়েছে।
যেমন— সমাজের শীর্ষস্থানে থাকা ব্রাক্ষ্মণদের কাজ ছিল যাগযজ্ঞ, পুজার্চনা, অধ্যয়ন, অধ্যাপনা ও চিকিৎসা। দ্বিতীয় স্তরভুক্ত ক্ষত্রিয়দের কাজ ছিল দেশজয়, দেশরক্ষা ও প্রশাসন পরিচালনা। অন্যদিকে বৈশ্যরা কৃষি, শিল্প ও বাণিজ্যের মাধ্যমে সম্পদ গ্রহণ করত। সমাজের সর্বনিম্ন স্তরে অবস্থানকারী শূদ্রদের প্রধান কাজ ছিল উপরোক্ত তিন বর্ণের সেবা করা।
ঋগ্বৈদিক যুগে জাতি প্রথা:
পরবর্তীকালে বৈদিক সমাজে মানুষ আরও নতুন নতুন পেশার সঙ্গে যুক্ত হলে পূর্বতন চতুর্বর্ণ প্রথায় নানা সংমিশ্রণের মাধ্যমে বিভিন্ন নতুন মিশ্রবর্ণের সৃষ্টি হয়। এই সময় থেকে বর্ণপ্রথা ক্রমে জাতিপ্রথার দিকে অগ্রসর হতে থাকে। কেউ কেউ মনে করেন যে, ঋগ্বৈদিক যুগেই আর্য সমাজে জাতিভেদপ্রথার সূচনা হয়। কেন-না, কোনো বর্ণের সন্তান জন্মগতভাবে তার পূর্বপুরুষের বর্ণই গ্রহণ করত। এইভাবে চারটি বর্ণ ক্রমে চারটি জাতিতে পরিণত হয়।
যজুর্বেদের যুগে জাতি প্রথা:
ড. এ এল বাসাম মনে করেন যে, ঋগ্বৈদিক যুগের সমাজে শ্রেণিবৈষম্য থাকলেও জাতিবৈষম্য ছিল না। তবে বর্ণ ও জাতিভেদপ্রথার মধ্যে যোগসূত্র বর্তমান এবং জাতিভেদপ্রথার উদ্ভবে বর্ণ প্রথার যথেষ্ট গুরুত্ব ছিল। পরবর্তী বৈদিক যুগে পূর্ব ভারতে আর্য-বসতির প্রসার ঘটতে থাকলে সমাজে নানা জটিলতা দেখা দেয়। তখনই, অর্থাৎ পরবর্তী বৈদিক যুগের সমাজে জাতি প্রথা সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে বলে অধিকাংশ ঐতিহাসিক মনে করেন।
জাতি প্রথার উপাদান:
পণ্ডিতগণ মনে করেন যে, ঋগ্বৈদিক সমাজে পেশাগত ভিত্তিতে যে বর্ণ প্রথার উদ্ভব ঘটেছিল, পরবর্তীকালে তা থেকেই জাতিভেদপ্রথার উদ্ভব ঘটে। ঐতিহাসিক ড. ডি ডি কোশাম্বী মনে করেন যে, ঋগ্বৈদিক যুগের পরবর্তীকালে আর্য সমাজের বিভিন্ন উপজাতি প্রথা ভেঙে পড়তে থাকে এবং তখনই জাতিপ্রথার আত্মপ্রকাশ ঘটে।
- ভারতবর্ষে প্রবেশের পর বৈদিক আর্যরা অনার্যদের সঙ্গে গাত্রবর্ণের ভিত্তিতে নিজেদের পার্থক্য বজায় রাখা তথা শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণস্বরূপ বর্ণব্যবস্থার সূচনা করেছিল।
- আর্য সভ্যতা ভারতবর্ষে সম্প্রসারণলাভের ফলে বিভিন্ন পেশাজীবী শ্রেণি গড়ে ওঠে। এরই ফলশ্রুতিতে আর্য সমাজে ব্রাক্ষ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শূদ্র – এই চারটি বর্ণের উদ্ভব হয়েছিল।
চতুর্বর্ণের নির্দিষ্ট কার্যাবলি:
আর্য সমাজে গড়ে ওঠা চতুর্বর্ণ ব্যবস্থায় প্রতিটি বর্ণের জন্য পৃথক পৃথক পেশা নির্দিষ্ট করা হয়েছে।
যেমন— সমাজের শীর্ষস্থানে থাকা ব্রাক্ষ্মণদের কাজ ছিল যাগযজ্ঞ, পুজার্চনা, অধ্যয়ন, অধ্যাপনা ও চিকিৎসা। দ্বিতীয় স্তরভুক্ত ক্ষত্রিয়দের কাজ ছিল দেশজয়, দেশরক্ষা ও প্রশাসন পরিচালনা। অন্যদিকে বৈশ্যরা কৃষি, শিল্প ও বাণিজ্যের মাধ্যমে সম্পদ গ্রহণ করত। সমাজের সর্বনিম্ন স্তরে অবস্থানকারী শূদ্রদের প্রধান কাজ ছিল উপরোক্ত তিন বর্ণের সেবা করা।
ঋগ্বৈদিক যুগে জাতি প্রথা:
পরবর্তীকালে বৈদিক সমাজে মানুষ আরও নতুন নতুন পেশার সঙ্গে যুক্ত হলে পূর্বতন চতুর্বর্ণ প্রথায় নানা সংমিশ্রণের মাধ্যমে বিভিন্ন নতুন মিশ্রবর্ণের সৃষ্টি হয়। এই সময় থেকে বর্ণপ্রথা ক্রমে জাতিপ্রথার দিকে অগ্রসর হতে থাকে। কেউ কেউ মনে করেন যে, ঋগ্বৈদিক যুগেই আর্য সমাজে জাতিভেদপ্রথার সূচনা হয়। কেন-না, কোনো বর্ণের সন্তান জন্মগতভাবে তার পূর্বপুরুষের বর্ণই গ্রহণ করত। এইভাবে চারটি বর্ণ ক্রমে চারটি জাতিতে পরিণত হয়।
যজুর্বেদের যুগে জাতি প্রথা:
ড. এ এল বাসাম মনে করেন যে, ঋগ্বৈদিক যুগের সমাজে শ্রেণিবৈষম্য থাকলেও জাতিবৈষম্য ছিল না। তবে বর্ণ ও জাতিভেদপ্রথার মধ্যে যোগসূত্র বর্তমান এবং জাতিভেদপ্রথার উদ্ভবে বর্ণ প্রথার যথেষ্ট গুরুত্ব ছিল। পরবর্তী বৈদিক যুগে পূর্ব ভারতে আর্য-বসতির প্রসার ঘটতে থাকলে সমাজে নানা জটিলতা দেখা দেয়। তখনই, অর্থাৎ পরবর্তী বৈদিক যুগের সমাজে জাতি প্রথা সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে বলে অধিকাংশ ঐতিহাসিক মনে করেন।
জাতি প্রথার উপাদান:
পণ্ডিতগণ মনে করেন যে, ঋগ্বৈদিক সমাজে পেশাগত ভিত্তিতে যে বর্ণ প্রথার উদ্ভব ঘটেছিল, পরবর্তীকালে তা থেকেই জাতিভেদপ্রথার উদ্ভব ঘটে। ঐতিহাসিক ড. ডি ডি কোশাম্বী মনে করেন যে, ঋগ্বৈদিক যুগের পরবর্তীকালে আর্য সমাজের বিভিন্ন উপজাতি প্রথা ভেঙে পড়তে থাকে এবং তখনই জাতিপ্রথার আত্মপ্রকাশ ঘটে।
0 মন্তব্যসমূহ