সম্রাট চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের ইতিহাস:


চন্দ্ৰগুপ্ত মৌর্য (৩২৪-২৯৭ খ্রীষ্টপূর্ব):

পুরাণ মতে মৌর্যরা ছিলেন শুদ্র সম্প্রদায়ের। মৌর্য বংশের উৎপত্তি চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের মায়ের নাম— 'মুরা' থেকে এসেছে। (মুদ্রারাক্ষস অনুসারে)। 'মুরা' নাকি কোনো এক নন্দ রাজার দাসী ছিলেন। বৌদ্ধগ্রন্থ অনুযায়ী তাঁরা ছিলেন শাক্য উপজাতীয় ক্ষত্রিয় বংশের।

  • চন্দ্ৰগুপ্ত মৌর্য ‘মহারাজাধিরাজ' উপাধি ধারণ করেন। তিনি ছিলেন প্রথম ঐতিহাসিক তথা প্রথম সার্বভৌম নৃপতি। 
  • গ্রীকরা তাঁকে 'সান্ড্রোকোটাস' বলতো। সান্ড্রোকোটাসের অর্থ হল – বন্ধুত্বপূর্ণ চুক্তির মাধ্যমে গ্রীকদের সঙ্গে সৌহার্দ্য স্থাপন
  • মেগাস্থিনিস তাঁর আমলে সেলুকাসের দূত হিসাবে (৩০৫-৩০০ খ্রীষ্টপূর্ব) ভারতের এসেছিলেন। বিন্ধ্যাচলের অরণ্যে চন্দ্রগুপ্তের সাথে কৌটিল্যের সাক্ষাৎ হয়েছিল।
  • ৩২৪ খ্রীষ্টপূর্বব্দে চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য ধননন্দকে পরাজিত করে মৌর্যবংশের প্রতিষ্ঠা করেন।
  • সেলুকাসের সাথে যুদ্ধ ৩০৫ খ্রীষ্টপূর্ব হয়। সেলুকাস পরাজিত হয়ে কাবুল, কান্দাহার, হিরাট ও মাণ প্রদেশ চন্দ্রগুপ্তকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হন বিনিময়ে চন্দ্রগুপ্ত সেলুকাসকে ৫০০ হাতি উপহার দেন। এটি প্রথম কোনো ভারতীয় রাজার প্রথম আন্তর্জাতিক চুক্তি। 
  • চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য সেলুকাসের মেয়ে হেলেনকে বিয়ে করেন বলে কথিত আছে। যদিও ঐতিহাসিক ভিনসেন্ট স্মিথ তা অস্বীকার করেন।

তাঁর আমলে সমগ্র সাম্রাজ্য ৪টি আঞ্চলিক প্রদেশে বিভক্ত ছিল—
  • উত্তরাপথ (রাজধানী— তক্ষশিলা)।
  • অবন্তীপথ (রাজধানী — উজ্জ্বয়িনী)।
  • দক্ষিণাপথ (রাজধানী – তোসালি)।
  • প্রাচ্য (রাজধানী— পাটলিপুত্র)।

২৪ বছর রাজত্ব করার পর শেষ জীবনে তিনি জৈন ধর্ম গ্রহণ করেন এবং মহীশূরের শ্রাবণবেলগোলায় ভদ্রবাহুর সাথে জৈন ধর্ম প্রচারে গিয়েছিলেন। সেখানে জৈন প্রথা অনুযায়ী 'প্রায়োপ্রবেশনে' (অনশনে) দেহত্যাগ করেন।

  • জুনাগড় লিপি থেকে জানা যায় তিনি গুজরাট ও সৌরাষ্ট্র দখল করেছিলেন।
  • চামুণ্ডা রায় শ্রবণবেলগোলায় গোমতীশ্বরের মন্দির নির্মাণ করেন।

0 মন্তব্যসমূহ