অর্থ বিলের সংজ্ঞা | অর্থ বিল পাসের পদ্ধতি আলোচনা কর?


অর্থ বিলের সংজ্ঞা:

ভারতীয় সংবিধানের ১১০ নং ধারায় বলা হয়েছে— ভারতের সঞ্চিত তহবিল বা আকস্মিক তহবিল থেকে অর্থ বিনিয়োগ সংক্রান্ত বিষয় কিংবা ব্যয়ের পরিমাণ বৃদ্ধি করা সংক্রান্ত বিষয়ের সঙ্গে জড়িত ও প্রাসঙ্গিক কোনো আর্থিক অঙ্গীকার ও নীতিকেই অর্থ বিল বলে।

অর্থ বিল পাসের পদ্ধতি:
আইনসভায় অর্থ বিল পাসের পদ্ধতি বিষয়ে সংবিধানের ১০৯ নং ধারায় ব্যাখ্যা করা হয়েছে। অর্থমন্ত্রী বা ওই সংক্রান্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী অর্থ বিল উত্থাপন করে থাকে। লোকসভায় বিভিন্ন পর্যায়ের মধ্য দিয়ে অর্থ বিলটি গৃহীত হয়। যথা—

অর্থ বিল কেবলমাত্র লোকসভাতেই পেশ করা হয়:
১০৯ (১) নং ধারানুসারে কোনো অর্থ বিল রাজ্যসভায় উত্থাপন করা যায় না। রাষ্ট্রপতির পূর্বানুমতি নিয়ে লোকসভায় কোনো মন্ত্রী কর্তৃক অর্থ বিল উত্থাপিত হয়। লোকসভায় নির্দিষ্ট দিনে অর্থ বিলের শিরোনাম পাঠের সঙ্গে সঙ্গে অর্থ বিলের প্রথম পাঠ শেষ হয়। প্রথম পাঠের পর অন্যান্য সরকারি বিলের মতো অর্থ বিলকেও আইন প্রণয়নের দ্বিতীয় ও তৃতীয় পাঠের স্তরসমূহ অতিক্রম করতে হয়। অর্থ বিলকে কোনো সিলেক্ট কমিটিতে প্রেরণ করতে হয় না। লোকসভায় তৃতীয় পাঠ শেষ হলে অধ্যক্ষের প্রমাণপত্র-সহ অর্থ বিলকে রাজ্যসভায় প্রেরণ করা হয়।

লোকসভা কর্তৃক অনুমোদিত অর্থ বিল রাজ্যসভায় সংশোধন ও সুপারিশের জন্য প্রেরণ করা হয়:
কোনো অর্থ বিল লোকসভায় গৃহীত হওয়ার পর তা সুপারিশের জন্য রাজ্যসভায় পাঠানো হয়।
ওই সময় লোকসভার অধ্যক্ষকে একটি সার্টিফিকেট প্রদান করতে হয়, যার মধ্যে অর্থ বিল সংক্রান্ত বিষয় উল্লিখিত থাকে। রাজ্যসভা অর্থ বিল পাওয়ার পর ১৪ দিনের মধ্যে লোকসভার নিকট তার সুপারিশ পেশ করে।

রাষ্ট্রপতির সম্মতি:
রাষ্ট্রপতির সম্মতি ব্যতীত কোনো অর্থ বিল আইনে পরিণত হয় না। সংসদ কর্তৃক অর্থ বিল গৃহীত হওয়ার পর লোকসভার অধ্যক্ষের সার্টিফিকেট-সহ অর্থ বিল রাষ্ট্রপতির সম্মতির জন্য প্রেরিত হয়। রাষ্ট্রপতির পূর্বানুমতি নিয়েই অর্থ বিল উত্থাপিত হয় বলে তিনি এই অর্থ বিল থেকে তার সম্মতি প্রত্যাহার করতে পারেন না এবং অর্থ বিলে রাষ্ট্রপতি স্বাক্ষর দিতে বাধ্য থাকেন।

উপরোক্ত আলোচনা থেকে বলা যায়, অর্থ বিল পাসের ক্ষেত্রে লোকসভার থেকে মন্ত্রীসভাই অধিক ক্ষমতা ভোগ করে।

0 মন্তব্যসমূহ