১. গিরিখাত কাকে বলে?
উঃ- সংকীর্ণ ও গভীর নদী উপত্যকাকে গিরিখাত বলে।উদাহরণ:— পেরুর কলকা নদীর ক্যানন-দ্য কলকা গিরিখাত।
২. ক্যানিয়ন কাকে বলে?
উঃ- অতি গভীর ও অতি সংকীর্ণ নদী উপত্যকাকে ক্যানিয়ন বলে।
উদাহরণ:— কলোরাডো নদীর গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন।
৩. মন্থকূপ কাকে বলে?
উঃ- নদীর তলদেশে অবঘর্ষ প্রক্রিয়া শিলাখণ্ডের আঘাতে যে গোলাকার গর্ত সৃষ্টি হয়, তাকে মন্থকূপ বলে।
উদাহরণ:— খরকাই নদীখাতে অসংখ্য মন্থকূপ দেখা যায়।
৪. খরস্রোত (Rapid) কাকে বলে?
উঃ- আদ্র জলবায়ুযুক্ত অঞ্চলে নদীর গতিপথে কঠিন ও কোমল শিলা উলম্বভাবে অবস্থান করলে অসম ক্ষয়কার্যের ফলে জলধারা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ধাপে নীচের দিকে নেমে আসে। এরূপ গঠনের জলপ্রপাতকে খরস্রোত বা র্যাপিড বলে।
উদাহরণ:— জাইরে নদীর লিভিংস্টোন জলপ্রপাত।
৫. বদ্বীপ কাকে বলে?
উঃ- নদী মোহনায় নদীস্রোতের বেগ ক্রমশ কমে আসায় নদীবাহিত বস্তুভার ক্রমান্বয়ে জমতে থাকে, এর ফলে বাংলা মাত্রাহীন 'ব' বা গ্রিক অক্ষর ডেল্টা 'ব'-এর মতো যে ভূমিরূপ সৃষ্টি হয় তাকে বদ্বীপ বলে।
উদাহরণ:— গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র বদ্বীপ পৃথিবীর বৃহত্তম দ্বীপ।
৬. নদীবাঁক বা মিয়েন্ডার (Meander) কাকে বলে?
উঃ- সমভূমি প্রবাহে ভূমির ঢাল হ্রাস পাওয়ার জন্য এবং নদীবাহিত বোঝার পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ার জন্য নদী এঁকেবেঁকে সর্পিলাকারে প্রবাহিত হয়। এর ফলে নদীর গতিপথে যে অসংখ্য বাঁক দেখা যায় তাকে মিয়েন্ডার বলে।
উদাহরণ:— গঙ্গা, সিন্ধু প্রভৃতি নদীতে অসংখ্য বাঁক দেখা যায়।
৭. প্লাবনভূমি (Flood Plain) কাকে বলে?
উঃ- সমভূমি প্রবাহে নদীর ঢাল কম হওয়ায় নদীবাহিত উপাদানসমূহ নদীগর্ভে সঞ্চিত হয়ে নদীখাত ভরাট করে। এর ফলে নদীখাতের জলবহন ক্ষমতা হ্রাস পায় এবং বর্ষাকালে অতিরিক্ত জলপ্রবাহে দু-কূল প্লাবিত হয়ে প্লাবনভূমি নামক সমভূমি সৃষ্টি করে।
উদাহরণ:— গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র নদীর নিম্ন অববাহিকায় দেখা যায়।
৮. স্বাভাবিক বাঁধ (Natural Levee) কাকে বলে?
উঃ- প্লাবনের পর নদীবাহিত বস্তুভার নদীর দু-কূল ছাপিয়ে নিম্নভূমিতে সঞ্চিত হয়ে ক্রমান্বয়ে যে বাঁধের সৃষ্টি হয় তাকে স্বাভাবিক বাঁধ বলে।
উদাহরণ:— ভাগীরথী নদীর পশ্চিমপাড়ে স্বাভাবিক বাঁধ, জলাভূমি দেখা যায়।
১০. অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ (Oxbow Lake) কাকে বলে?
উঃ- নদীর সমভূমি প্রবাহে নদীর গতিপথে অনেকটা ঘোড়ার ক্ষুরের মতো সৃষ্ট পরিত্যক্ত জলাভূমিগুলিকে অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ বলে।
উদাহরণ:— ইয়াংসিকিয়াং নদীর বদ্বীপ প্রবাহে এরূপ হ্রদ দেখা যায়।
১১. পলল শঙ্কু (Alluvial Cone) কাকে বলে?
উঃ- পার্বত্য প্রবাহের শেষে নদীবাহিত পদার্থসমূহ সঞ্চিত হয়ে যে শঙ্কুর মতো দেখতে ভূমিরূপ সৃষ্টি হয় তাকে পলল শঙ্কু বলে।
উদাহরণ:— ভারতে কোশি নদীতে পলল শঙ্কু দেখা যায়।
১২. পলল ব্যজনী (Alluvial Fan) কাকে বলে?
উঃ- পলল শঙ্কু নদীবিধৌত হলে শঙ্কু অর্ধগোলাকার আকৃতিতে বিভক্ত হয় এবং হাতপাখা সদৃশ দেখতে হয়। একে পলল ব্যজনী বলে।
উদাহরণ:— ঘর্ঘরা, গণ্ডক প্রভৃতি নদীতে পলল ব্যজনী দেখা যায়।
0 মন্তব্যসমূহ