মিথ বা পৌরাণিক কাহিনি কি?
মিথ বা পৌরাণিক কাহিনি হল প্রাগৈতিহাসিক যুগের বিভিন্ন কাহিনি বা ঘটনার বিবরণ, যেগুলির ভিত্তি হল মানব সভ্যতার উদ্ভবের পূর্বে ঐশ্বরিক জগতে সংঘটিত হওয়া নানান কাল্পনিক ঘটনা। এটি সাহিত্যের সর্বপ্রথম রূপ, যা এককথায় হল মৌখিক ইতিহাস।মিথ বা পৌরাণিক কাহিনি বিষয়বস্তু:
পৌরাণিক কাহিনির বিষয়বস্তুগুলির মধ্যে থাকে—
- নৈসর্গিক ঘটনাবলি।
- দেবদেবী সংক্রান্ত বিষয়।
মিথ বা পৌরাণিক কাহিনি বৈশিষ্ট্য:
মিথ বা পৌরাণিক কাহিনির বৈশিষ্ট্যগুলি হল—
- এগুলি উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত।
- এই সকল কল্পকাহিনি প্রাগৈতিহাসিক যুগে মৌখিকভাবে রচিত।
- মিথ হল অলৌকিক বা অতীন্দ্রিয় জগতের বিবরণ।
- কোনাে সমাজ ও সম্প্রদায়ের মূল ভিত্তি হল এইসব পৌরাণিক কাহিনি।
মিথ বা পৌরাণিক কাহিনির গুরুত্ব:
ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে মিথগুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। যেমন—
অতীতের দর্পণ হিসেবে:
পৌরাণিক কাহিনিগুলি হল, 'গল্পের আকারে সত্য ঘটনার প্রকাশ। তাই পৌরাণিক কাহিনিকে সঙ্গী করে ইতিহাসের পুনর্নির্মাণ করা যায়। এই পৌরাণিক কাহিনিকে সম্বল করেই গ্রিসের প্রাচীন ট্রয় নগরী ও ট্রয় যুদ্ধক্ষেত্রের অবস্থান নির্ণয় করা গেছে।
সময়কাল নির্ণয়:
পৌরাণিক কাহিনি অতীতের অনেক ধারাবাহিক ছবি তুলে ধরে, ফলে এর মাধ্যমে ইতিহাসের সময়কাল নির্ধারণ করা যায়। পৌরাণিক কাহিনিগুলির সঙ্গে তুলনামূলক পদ্ধতিতে যাচাই করে ইতিহাসের বহু সাল, তারিখ নির্ণয় করা সম্ভব হয়েছে।
বংশতালিকা নির্ধারণ:
পৌরাণিক কাহিনিগুলি থেকে প্রাচীনকালের বিভিন্ন রাজবংশের তালিকা জানা যায়। ঐতিহাসিক ড. রণবীর চক্রবর্তীর মতে, পুরাণে বর্ণিত বংশগুলির অস্তিত্বের বেশিরভাগই স্বীকৃত সত্য।
ধর্ম-সংস্কৃতির অতীত ধারণালাভ:
পৌরাণিক কাহিনি থেকে অতীতের সমাজ-সংস্কৃতি ও ধর্ম সম্পর্কে ধারণা লাভ করা যায়। অধ্যাপক চক্রবর্তী বলেছেন, বর্তমানে যা হিন্দুধর্ম বলে প্রতিভাত হয়, তার মুখ্য পরিচয় পুরাণে পাওয়া যাবে।
উদাহরণ: পৃথিবীতে বহু পৌরাণিক কাহিনি রয়েছে, যার মধ্যে কয়েকটি হল—
- হিন্দু পৌরাণিক কাহিনি।
- বাইবেলের পৌরাণিক কাহিনি।
- গ্রিসের পৌরাণিক কাহিনি।
- রােমের পৌরাণিক কাহিনি।
0 মন্তব্যসমূহ