অধীনতামূলক মিত্রতা নীতি:


অধীনতামূলক মিত্রতা নীতি লর্ড ওয়েলেসলি প্রবর্তন করেন (১৭৯৮)। ব্রিটিশ সামাজ্য বিস্তারের জন্য লর্ড ওয়েলেসলি যে সকল নীতি গ্রহণ করেছিলেন, তাঁর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছিল 'অধীনতামূলক মিত্রতা নীতি' (Subsidiary Alliance)। কোনো দেশীয় রাজা এই নীতি গ্রহণ করলে কয়েকটি শর্ত পালন করতে হত।

অধীনতামূলক মিত্রতা নীতির কারণ:
ইংল্যান্ডে এই সময় শিল্প বিপ্লবের জন্য বাজারের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছিল। তারা সমগ্র ভারতে ব্রিটিশ আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করে, কাঁচামাল সংগ্রহ ও পণ্যসামগ্রীর বাজার অধিগ্রহণ করতে চেয়েছিল।
ভারত থেকে ফরাসি প্রভাব দূর করা।

অধীনতামূলক মিত্রতা নীতির শর্তাবলী:
  • ইংরেজরা এই নীতি গ্রহণ করা রাজ্যগুলিকে বহিঃশত্রুর আক্রমণ ও অভ্যন্তরীণ বিপদ থেকে রক্ষা করবে।
  • সেই রাজ্যে কেবল ইংরেজ সৈন্য রাখতে হবে।
  • সেনাদলের ব্যয় নির্বাহের জন্য নগদ টাকা বা রাজ্যের একাংশ ছেড়ে দিতে হবে।
  • রাজ্যের দরবারে একজন ইংরেজ প্রতিনিধি থাকবেন।
  • কোম্পানীর বিনা অনুমতিতে অপর কোন শক্তির সঙ্গে মিত্রতা বা যুদ্ধ করা যাবে না।
  • রাজ্য থেকে ইংরেজ বাদে সকল ইউরোপীয়দের বিতাড়িত করতে হবে।

অধীনতামূলক মিত্রতা নীতির প্রয়োগ:
সর্বপ্রথম হায়দ্রাবাদের নিজাম ১৭৯৮ খ্রীষ্টাব্দে এই চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেন। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত সুরক্ষিত করার জন্য অযোধ্যা (১৮০১ খ্রীষ্টাব্দে) কে বলপূর্বক এই চুক্তি স্বাক্ষরে বাধ্য করা হয়। ১৮০২ খ্রীষ্টাব্দে পেশোয়া দ্বিতীয় বাজীরাও বেসিনের সন্ধির মাধ্যমে এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। এছাড়াও অনেক ক্ষুদ্র রাজ্য এই চুক্তি স্বাক্ষর করে।

অধীনতামূলক মিত্রতা নীতির ফলাফল:
এই নীতির ফলে দেশীয় রাজ্যের আর্থিক ক্ষতি হয়। ইংরেজরা দেশীয় রাজ্যের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ শুরু করে। দেশীয় রাজ্যগুলি ইংরেজদের হাতের পুতুলে পরিণত হয়। ইংরেজরা তাদের সেনাবাহিনী আরও সুগঠিত করে। কোম্পানী নিজ অধিকৃত স্থান থেকে বহুদূরে যুদ্ধ চালাতে সক্ষম হয়েছিল।

0 মন্তব্যসমূহ