চুয়াড় বিদ্রোহ কি? চুয়াড় বিদ্রোহের ফলাফল:


ইস্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানী কর্তৃক প্রবর্তিত ভূমি-রাজস্ব ব্যবস্থা বাংলার কৃষিব্যবস্থাকে সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত করে এবং দুর্ভিক্ষ ও মহামারী জনগণের নিত্যসহচর হিসেবে দেখা দেয়। ছিয়াত্তরের মন্বন্তর যেভাবে সন্ন্যাসী বিদ্রোহের ব্যাপকতা বৃদ্ধি করে ঠিক সেভাবেই ঐ দুর্ভিক্ষ বিহারের অন্তর্গত ঘাটশিলা ও ধলভূমের মধ্যবর্তী পার্বত্য অঞ্চলে বসবাসকারী চুয়াড় নামে এক উপজাতির মধ্যে বিদ্রোহের কারণ হয়। ধলভূমের রাজা জগন্নাথ ধল ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হলে ঐ সুযোগ নিয়ে চুয়াড়রাও বিদ্রোহ করে। চুয়াড়গণ জগন্নাথ ধল ও অন্যান্য স্থানীয় জমিদারদের সঙ্গে মিলিত হয়ে এক ব্যাপক নাশকতামূলক দাঙ্গা-হাঙ্গামার সূত্রপাত করে।

চুয়াড় বিদ্রোহের ফলাফল:
বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ক্যাপটেন মর্গ্যান একদল সৈন্য নিয়ে অগ্রসর হন, কিন্তু মর্গ্যান তাদের হাতে সম্পূর্ণভাবে পরাস্ত হন এবং বহু সৈন্য নিহত হয়। সামায়িকভাবে ব্রিটিশ শাসকগণ চুয়াড় বিদ্রোহ দমন করতে পারলেও ১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দে চুয়াড়গণ পুনরায় বিদ্রোহী হয়। মেদিনীপুরের পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে বিদ্রোহীদের কার্যকলাপ চরম আকার ধারণ করে এবং মেদিনীপুর শহরের নিরাপত্তাও বিঘ্নিত হতে থাকে। ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে চুয়াড়গণ বহু অঞ্চলে সরকারী সম্পত্তি ও ফসলে অগ্নিসংযোগ করতে থাকে। গভর্নর জেনারেল লর্ড ওয়েলেসলী বহু চেষ্টা করে শেষ পর্যন্ত এই বিদ্রোহ দমন করতে সক্ষম হন। 

0 মন্তব্যসমূহ