ভারতের জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠা:
১৮৮৫ খ্রিঃ অ্যালান অক্টোভিয়ান হিউম ভারতবর্ষে জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠা করেন। ১৮৮৫ সালে জাতীয় কংগ্রেসের প্রথম সভাপতিত্ব করেন উমেশচন্দ্র ব্যানার্জি।বঙ্গভঙ্গ:
১৯০৫ খ্রিস্টাব্দের ১৬ অক্টোবর লর্ড কার্জন বাংলাকে দুই ভাগে ভাগ করার সিদ্ধান্ত ঘােষণা করেন। তিনি বাংলা থেকে পূর্ব বঙ্গ এবং অসমকে আলাদা করে দেন।
স্বদেশি আন্দোলন:
অরবিন্দ ঘােষ, বাল গঙ্গাধর তিলক, লালা লাজপত রায়, বিপিন চন্দ্র পাল প্রমুখেরা স্বদেশি আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। ভারতের জাতীয় কংগ্রেস ১৯০৫ খ্রিঃ বেনারস অধিবেশনে এই স্বদেশি আন্দোলনকে স্বীকৃতি দেয়।
মুসলিম লিগের প্রতিষ্ঠা:
১৯০৬ খ্রিঃ আগা খান, নবাব সালি মােল্লা এবং মহসিন উল মুলকের নেতৃত্বে মুসলিম লিগ প্রতিষ্ঠা হয়।
গদর পার্টি:
১৯১৩ খ্রিঃ লালা হরদয়াল, তারকনাথ দাস এবং সােহন সিং ভাকনার নেতৃত্বে গদর পার্টি গঠিত হয়। গদর পার্টির সদর দপ্তর ছিল সানফ্রান্সিসকো।
হােমরুল আন্দোলন:
১৯১৬ খ্রিঃ বাল গঙ্গাধর তিলক, অ্যানি বেসান্ত হােমরুল আন্দোলনের সূচনা করেন।
জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকাণ্ড:
১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের ১৩ এপ্রিল। অমৃতসরের জালিয়ানওয়ালাবাগের প্রান্তরে আন্দোলনরত জনতার উপর জেনারেল ডায়ারের নেতৃত্বে গুলিবর্ষণ করা হয়। এই ঘটনায় বহু মানুষ নিহত হন। এই ঘটনার প্রতিবাদে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নাইট উপাধি ত্যাগ করেন।
অসহযােগ আন্দোলন:
১৯২০ খ্রিস্টাব্দের সেপ্টেম্বর মাসে জাতীয় কংগ্রেসের কলকাতা অধিবেশনে অসহযােগ আন্দোলনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এই অসহযােগ আন্দোলনই গান্ধিজিকে সর্বপ্রথম সর্ব ভারতীয় নেতা হিসাবে স্বীকৃতি দেয়।
চৌরিচৌরার ঘটনা:
১৯২২ খ্রিঃ ৫ ফেব্রুয়ারি গােরক্ষপুর জেলার চৌরিচৌরায় বিক্ষুব্ধ জনতা ২২ জন পুলিশকে পুড়িয়ে হত্যা করে। এই ঘটনার প্রতিবাদে ১৯২২ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি গান্ধিজি অসহযােগ আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন।
সাইমন কমিশন:
ভারতে রাজনৈতিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করার জন্য এবং ভারতের সংসদীয় গণতন্ত্র সংস্কার আনার জন্য জন সাইমনের নেতৃত্বে ১৯২৮ খ্রিঃ একটি কমিটি ভারতে আসে, এটা সাইমন কমিশন নামে পরিচিত।
লাহোর অধিবেশন:
১৯২৯ সালের ১৯ ডিসেম্বর পণ্ডিত জওহরলাল নেহেরুর সভাপতিত্বে জাতীয় কংগ্রেসের লাহাের অধিবেশনে সর্বপ্রথম পূর্ণ স্বরাজের দাবি গৃহীত হয়।
গান্ধি আরউইন চুক্তি:
১৯৩১ সালের ৫ মার্চ মহাত্মা গান্ধি এবং লর্ড আরউইনের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, এটা গান্ধি আরউইন চুক্তি নামে পরিচিত। এই চুক্তির ফলেই আইন অমান্য আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেওয়া হয় এবং গান্ধি দ্বিতীয় গােলটেবিল বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন।
ক্রিপস মিশন:
ব্রিটিশ সরকার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ভারতীয়দের কাছ থেকে আরও বেশি সাহায্য পাওয়ার লক্ষ্য নিয়ে স্যার স্ট্যাফোর্ড ক্রিপসকে ভারতে পাঠান। ক্রিপস যুদ্ধের পরে ভারতবর্ষকে স্বায়ত্ত শাসন দেবার কথা বলে।
ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মি:
রাসবিহারি বােস এবং মােহন সিং ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মি গঠন করেন। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বােস ১৯৪১ সালের জানুয়ারি মাসে ভারত থেকে গােপনে পালিয়ে বার্লিনে পৌছােন। ১৯৪৩ সালের জুলাই মাসে সিঙ্গাপুরে তিনি ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মিতে যােগদান করেন। সেখানেই রাসবিহারি বােস তাঁকে বাহিনীর নেতৃত্বভার অর্পণ করেন। জাপানি বাহিনীর হাতে কারারুদ্ধ ভারতীয় সৈন্যদের নিয়েই ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মি গঠিত হয়। এই বাহিনীর রানি ঝাসি ব্রিগেড নামে একটি সম্পূর্ণ মহিলা ব্রিগেড় ছিল।
ক্যাবিনেট মিশন প্ল্যান:
লেবার পার্টি নব নিযুক্ত ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী লর্ড এটলি ১৯৪৬ সালের ১৫ মার্চ ক্যাবিনেট মিশনে ভারতবর্ষে আসার কথা ঘােষণা করেন। এই কমিশন প্রথমে ভারতের জাতীয় কংগ্রেস এবং মুসলিম লিগের সঙ্গে আলােচনায় বসে এবং ১৯৪৬ সালের ১৬ মে তাদের প্রস্তাব জমা দেয়। কংগ্রেস এবং মুসলিম লিগ দুপক্ষই এই কমিশনকে গ্রহণ করেছিল।
মাউন্টব্যাটেন পরিকল্পনা:
১৯৪৭ সালের ৩ জুন লর্ড মাউন্টব্যাটেন ভারতবর্ষে রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানের জন্য তার পরিকল্পনাগুলি ঘােষণা করেন। এই পরিকল্পনাগুলি হল—
- ভারতকে ভারত এবং পাকিস্তান নামক দুটি দেশে বিভক্ত করা হবে।
- বাংলা এবং পাঞ্জাবকে বিভক্ত করার কথা ঘােষণা করা হয়।
- পাকিস্তানের জন্য আলাদা সংবিধান সভা গঠনের কথাও মাউন্টব্যাটেন ঘােষণা করেন।
- দেশীয় রাজ্যগুলি কোন দেশের অধীনে যাবে, তা নির্বাচনের স্বাধীনতা তাদেরকেই দেওয়া হয়। ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট তারিখটি ভারতবর্ষ এবং পাকিস্তানকে তাদের শাসনভার বুঝিয়ে দেওয়া হবে বলে নির্ধারিত হয়।
দেশবিভাগ এবং স্বাধীনতা:
সমস্ত রাজনৈতিক দলই মাউন্টব্যাটেন পরিকল্পনাকে গ্রহণ করে এবং ১৯৪৭ সালের জুলাই মাসে ব্রিটিশ সরকার ভারতের স্বাধীনতা আইন পাশ করে। ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট ভারতবর্ষ স্বাধীনতা লাভ করে।
0 মন্তব্যসমূহ