ব্রিটিশ কমিউনিস্ট ফিলিপ স্প্রাট ভারতীয় কমিউনিস্টদের সহায়তায় ট্রেড ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠা, বিক্ষোভ সংগঠন, ধর্মঘট ও যুব আন্দোলন পরিচালনা করে শ্রমিক আন্দোলনকে এক ব্যাপকতর রূপদান করেছিলেন। সংবাদপত্রগুলি যাতে মার্কসবাদী চিন্তাধারা প্রচারে উদ্যোগী হয় তার জন্য তিনি সংবাদপত্রগুলিকে সবরকম সাহায্য ও উৎসাহ দিয়েছিলেন। ফলে কীর্তি, ক্রান্তি, কিষাণ, মজদুর, গণবাণী, লাঙ্গল প্রভৃতি মার্কসবাদী ভাবধারা পুষ্ট পত্রপত্রিকার আবির্ভাব হয়। এই সব মার্কসবাদী ভাবধারা পুষ্ট পত্রপত্রিকাগুলি ভারতে কমিউনিস্টদের পক্ষে জনমত গঠনে সাহায্য করেছিল। বামপন্থী নেতৃত্বের প্রভাবে শ্রমিক আন্দোলন ক্রমশ সংগ্রামী চরিত্রে রূপ নেয়। বোম্বাই -এর কারখানায় শ্রমিকরা গিরণি কামগড় শ্রমিক সংগঠন স্থাপন করেন। ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে বিভিন্ন মিলে শ্রমিকদের দাবি আদায় ও কাজের সময় কমাবার জন্য ধর্মঘট ডাকা হয়। রেলওয়ে ওয়ার্কার্সই উনিয়নের সদস্যরা এই ধর্মঘটে যোগ দিলে ধর্মঘট ব্যাপক আকার ধারণ করে। ক্রমশ বোম্বাই -এর শিল্প ধর্মঘট যুক্তপ্রদেশ, পাঞ্জাব ও বাংলায় ছড়িয়ে পড়ে। সতর্কতা মূলক ব্যবস্থা হিসাবে ব্রিটিশ সরকার মোজাফফর আহমেদ, শ্রীপদ অমৃত ডাঙ্গে, পি.সি. যোশী সহ শীর্ষ স্থানীয় কমিউনিস্ট নেতাদের আটক করে। ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দে এঁদের বিরুদ্ধে মিরাট ষড়যন্ত্রের মামলা আনা হয়। বিচারে মোজাফফর আহমেদ, এস.এ.ডাঙ্গে, নিম্বকার, ঘাটে, পি.সি.যোশি, স্প্রাট, ব্রাডলি প্রমুখ ৩৩ জন কমিউনিস্ট ও ট্রেড ইউনিয়ন নেতা দীর্ঘমেয়াদি কারাদন্ডে দন্ডিত হন। এতে শ্রমিক আন্দোলন সাময়িক ভাবে স্তিমিত হয়ে যায়। কিন্তু ১৯২৯-৩৩ -এ 'মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা' কমিউনিস্টদের গতি স্তব্ধ করতে পারেনি। প্রখ্যাত মার্কসবাদী ঐতিহাসিক রজনীপাম দত্তের ভাষায় মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা ভবিষ্যতের শ্রমিক আন্দোলনে নতুন প্রাণ সঞ্চার করেছিল। ডঃ বিপিনচন্দ্রের মতে এই মামলা বামপন্থী ও জাতীয়তাবাদীদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধি করে।
১. মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা কবে শুরু হয়?
উঃ- ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে।
২. মিরাট ষড়যন্ত্র মামলায় অভিযুক্ত বিদেশিদের নাম লেখা?
উঃ- ফিলিপ স্প্যাট, বেঞ্জামিন ফ্রান্সিস ব্রাডলি, লেস্টার হাচিনসন।
৩. মিরাট ষড়যন্ত্র মামলায় দীর্ঘমেয়াদী কারাদণ্ড কাদের হয়?
উঃ- মুজাফ্ফর আহমেদ, শওকত উসমানি, শিবনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, কে. এন. জোগেলকর, পি. সি. যোশি, এস. এ. ডাঙ্গে, ফিলিপ স্প্রাট প্রমুখ।
0 মন্তব্যসমূহ