১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দে ক্রেতা বা কনজিউমার বা উপভোক্তাদের স্বার্থ সুরক্ষিত রাখার জন্য ক্রেতা সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করা হয়, সেই আইন অনুযায়ী ক্রেতা আদালত গঠিত হয়।
ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের সংজ্ঞা:
যদি কোনো ক্রেতা কোনো সামগ্রী ক্রয়ের পর প্রতারিত হয়, তাহলে সেই ক্রেতা সঠিক পরিসেবা পাওয়ার জন্য আদালতের দ্বারস্থ হয়। ক্রেতা যাতে সঠিক পরিসেবা পায় তার জন্য ভারত সরকার যে আদালত প্রতিষ্ঠা করেছেন তাকে ক্রেতা সুরক্ষা আদালত (Consumer Court) রূপে চিহ্নিত করা হয়।
ক্রেতা সুরক্ষা আদালত গঠন:
ক্রেতাদের স্বার্থরক্ষার জন্য তিনটি স্তরে তিন ধরনের ক্রেতা আদালত গঠন করা হয়েছে।
জেলা স্তরের ক্রেতা সুরক্ষা আদালত: রাজ্য সরকার জেলা স্তরের ক্রেতাদের সুরক্ষার স্বার্থে যে সংস্থা গঠন করে, তা জেলা ক্রেতা আদালত নামে পরিচিত।
রাজ্য স্তরের ক্রেতা সুরক্ষা আদালত: ক্রেতা আদালতের মধ্যবর্তী স্তরটি হল রাজ্য স্তরের ক্রেতা সুরক্ষা আদালত।
জাতীয় স্তরে ক্রেতা সুরক্ষা আদালত: ক্রেতা আদালতের সর্বোচ্চ স্তরটি হল— জাতীয় স্তর। এই স্তরের আদালতের নাম হল জাতীয় ক্রেতা বিরোধ কমিশন, যা জাতীয় কমিশন নামে পরিচিত।
ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের উদ্দেশ্য:
ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের মূল উদ্দেশ্য হল ক্রেতাদের সুরক্ষা প্রদান। এককথায় কোনো ক্ষতিগ্রস্ত ক্রেতার অভিযোগের আইনসম্মত প্রতিকার বা নিষ্পত্তি বিধানই হল ক্রেতা আদালতের প্রধান উদ্দেশ্য. তা ছাড়া অন্যান্য উদ্দেশ্যগুলি হল—
১. কোনো বিক্রেতা পণ্য বিক্রয়ে বা পরিসেবা প্রদানে অসাধু উপায় অবলম্বন করলে।
২. বিধিবদ্ধ পরিসেবা প্রদানের ক্ষেত্রে ত্রুটিবিচ্যুতি দেখা দিলে।
ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের বৈশিষ্ট্য:
ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের নিজস্ব কিছু মৌলিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যেমন,
ত্রিস্তরে বিন্যস্ত: ক্রেতারা বিক্রেতার নিকট থেকে ক্রয় করা পণ্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে, সত্বর তার প্রতিবিধানের জন্য ক্রেতা সুরক্ষা আইন ত্রিস্তরীয় একটি ব্যবস্থা অবলম্বন করে।
আইন বিশেষজ্ঞদের প্রয়োজন নেই: ক্রেতারা এইরূপ আদালতে এককভাবে নালিশ জানানোর অধিকার ভোগ করে থাকে। অর্থাৎ অভিযোগপত্র দাখিল করার জন্য কোনো আইন বিশেষজ্ঞের প্রয়োজন হয় না।
ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের ক্ষমতা ও কার্যাবলি:
১. ক্রেতা আদালতকে নির্দিষ্ট এলাকার মধ্যে থেকেই কাজ করতে হয়।
২. ক্রেতা আদালতকে দেওয়ানি, ফৌজদারি ও ভারতীয় দণ্ডবিধি প্রয়োগের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
৩. ক্রেতা সুরক্ষা আইনে ২৫ নং ও ২৭ নং ধারা অনুসারে ক্রেতা আদালতের আদেশ অমান্য করলে বা আদেশ মানতে ব্যর্থ হলে আদেশ অমান্যকারীর জেল ও জরিমানা দুটোই হতে পারে।
পরিশেষে বলা যায়, বর্তমানে ক্রেতাদের সুরক্ষার্থে এই আদালত যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
1 মন্তব্যসমূহ
Kerta সুরক্ষা আদালতের টিকা
উত্তরমুছুন