ট্রুম্যান নীতি কি?
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে সমগ্র বিশ্ব পরস্পর বিরোধী দু’টি পৃথক শক্তি শিবিরে বিভক্ত হয়ে যায়। এর একদিকে ছিল আমেরিকা এবং অপরদিকে ছিল সোভিয়েত রাশিয়া। ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে মার্কিন রাষ্ট্রপতি হ্যারি ট্রুম্যান মার্কিন কংগ্রেসের এক বক্তৃতায় আশ্বাস দেন যে যদি কোনো মুক্ত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কোনো সংখ্যালঘু গোষ্ঠী বা কোনো বিদেশি রাষ্ট্র দ্বারা আক্রান্ত হয় তা হলে আমেরিকা তাদের সাহায্য করবে। রাষ্ট্রপতি ট্রুম্যানের এই ঘোষণা ট্রুম্যান নীতি নামে পরিচিত।মার্শাল পরিকল্পনার উদ্দেশ্য:
মূলত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিধ্বস্ত ইউরোপের আর্থিক পুনরুজ্জীবন –এর এই উদ্দেশ্যগুলি ছিল এই রকম;
অর্থনৈতিক উজ্জীবন: মার্শাল পরিকল্পনার মূল উদ্দেশ্য ছিল আর্থিক পুনরুজ্জীবন। এই পরিকল্পনা অনুসারে ১৯৪৮-৫১ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে মোট ১২ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করা হয়। এই আর্থিক সাহায্য পাবার ফলে ইউরোপের যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশগুলির অর্থনীতি পূর্বের ন্যায় প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে।
অর্থ অনুমোদন: মার্শাল পরিকল্পনা অনুসারে রাষ্ট্রপতি টুম্যান কর্তৃক ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের শেষদিকে মার্কিন কংগ্রেসে ১৭ বিলিয়ন ডলার অর্থ মঞ্জুরের জন্য বিল উত্থাপন করা হলে ১৩ বিলিয়ন ডলার মঞ্জুর করা হয়।
পরিকল্পনা গ্রহণকারী বিভিন্ন দেশ: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীতে ইউরোপের ছোটো–বড়ো মিলে ১৬ টি দেশ মার্শাল পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল। এই পরিকল্পনা গ্রহণকারী দেশগুলি একত্রিত হয়ে ‘European Economic Co–operation' বা EEC নামে একটি সংস্থা গড়ে তোলে।
রাশিয়ার প্রতিক্রিয়া: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী বিশ্বে রাশিয়া যেহেতু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান প্রতিপক্ষ ছিল সেই কারণেই মূলত মার্শাল পরিকল্পনায় ঋণ গ্রহণের পথ খোলা থাকলেও রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রী মলটোভ এই পরিকল্পনা গ্রহণ করেননি। এছাড়া মার্শাল পরিকল্পনা ছিল ‘ডলার সাম্রাজ্যবাদের’ পরিকল্পিত রূপ। এর দ্বারা আমেরিকা সাহায্য গ্রহণ করা দেশগুলির অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার সুযোগ পাবে যা রাশিয়া কখনোই চাইত না।
পূর্ব ইউরোপের বয়কট নীতি: ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে পূর্ব ইউরোপের দেশগুলি মার্শাল পরিকল্পনা গ্রহণ করা থেকে সম্পূর্ণভাবে বিরত ছিল।
0 মন্তব্যসমূহ