মনসবদারি প্রথা কি? মনসবদারি প্রথার বৈশিষ্ট্য: (mansabdari system).


মনসব' কথাটির অর্থ হল 'পদমর্যাদা' বা ‘Rank’। এই পদমর্যাদার অধিকারীদের বলা হয়। মনসবদারি প্রথা একটি পারসিক প্রথা। আকবরের বহুপূর্বে মধ্যে এশিয়াতে তৈমুরলঙ ও চেঙ্গিস খাঁর শাসনব্যবস্থায় মনসবদারি প্রথা প্রচলিত ছিল। সম্রাট আকবর ১৫৭৮ খ্রিস্টাব্দে সাম্রাজ্যের সামরিক ও অসামরিক ভিত্তি হিসেবে মনসবদারি প্রথা প্রবর্তন করেন। এটি ছিল সামরিক ও অসামরিক মুঘল কর্মীদের বিভিন্ন স্তরের মর্যাদার প্রতীক।


মনসবদারি প্রথার বৈশিষ্ট্য:
  • প্রতিটি মনসবদার নির্দিষ্ট সংখ্যক সেনা রাখত এবং প্রয়োজনে সম্রাটকে সৈন্যের যোগান দিত।
  • অশ্ব ও সেনা সংখ্যার ভিত্তিতে মনসবদারি ব্যবস্থা ৩৩ টি স্তরে বিভক্ত ছিল। মনসবদাররা ১০ থেকে ১০০০০ সৈন্য পর্যন্ত রাখার অধিকার পেতেন। আকবরের রাজত্বের শেষদিকে এই সংখ্যা ১২০০০ পর্যন্ত ওঠে। ৫০০ এর বেশি মনসবদারকে বলা হত আমীর। কেবলমাত্র রাজ পরিবারের সদস্যরাই ৫ হাজারের বেশি মনসব রাখতে পারতেন।
  • মনসবদার প্রথা বংশানুক্রমিক ছিল না। কর্মনিপুণতার মাধ্যমে এই মর্যাদা অর্জন করতে হত।
  • মনসবদারদের নিয়োগ, পদোন্নতি ও বরখাস্ত করা সবকিছুই সম্রাটের ইচ্ছার ওপর নির্ভর করত।
গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত থেকে মনসবদাররা সাম্রাজ্যে সমৃদ্ধি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেন। মনসবদারদের দক্ষতা ও সেবার ফলে ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে মুঘল সাম্রাজ্য সম্প্রসারিত হয়।

0 মন্তব্যসমূহ