'প্রায়-ঐতিহাসিক যুগ’ (Proto-Historic Age) বলতে সেই যুগকে বোঝায়, যখন লিপির ব্যবহার শুরু হয়েছে, কিন্তু আজও পর্যন্ত যার পাঠোদ্ধার সম্ভব হয়নি।
উদাহরণ হিসেবে হরপ্পা সভ্যতার কথা বলা যায়। হরপ্পা সভ্যতায় লিপির প্রচলন হয়েছিল। কিন্তু 'সিন্ধুলিপি’ নামে হরপ্পা সভ্যতার এই লিপির পাঠোদ্ধার করা আজও সম্ভব হয়নি।
অনেকে আবার ‘প্রাক্ ইতিহাস’ ও ‘প্রায়-ইতিহাস' পর্যায়ভেদে লিপিজ্ঞানের এই অতি সরল বিভাজনকে গুরুত্ব দিতে চান না। তাঁরা ভারতে ধাতুর অর্থাৎ তাম্র-ব্রোঞ্জ ব্যবহারের সূত্রপাত থেকে লৌহ যুগের সূচনা পর্যন্ত কালপর্বটিকে ‘প্রায় ঐতিহাসিক যুগ' হিসেবে চিহ্নিত করেন।
বলা বাহুল্য, ধাতুর ব্যবহারের ভিত্তিতে ভারতে যুগ বিভাজনের কিছু সমস্যা আছে। ভারতের সর্বত্র ধাতুর ব্যবহারের ক্রম-পরিবর্তন সমানভাবে হয়নি। উত্তর ভারতে পাথরের পরেই তামা এবং তামার পর লোহার ব্যবহার শুরু হয়। অর্থাৎ উত্তর ভারতে প্রস্তর, তাম্র এবং লৌহ যুগ পরপর আসে। কিন্তু দক্ষিণ ভারতে প্রস্তর যুগের পরেই আসে লৌহ যুগ — তামার যুগ সেখানে অনুপস্থিত। ইউরোপে পৃথক ব্রোঞ্জ যুগের অস্তিত্ব ছিল। কিন্তু ভারতে পৃথক কোনো ব্রোঞ্জ যুগের অস্তিত্ব ছিল না। এখানে তামা ও ব্রোঞ্জ ধাতু একই সঙ্গে ব্যবহৃত হতে থাকে।
0 মন্তব্যসমূহ