ভারতের রাষ্ট্রপতির ভেটো ক্ষমতা: (The veto power of the President of India).

অর্থবিল ও সংবিধান সংশোধনী বিলের কথা বাদ দিলে পার্লামেন্টে পাস হওয়া যে-কোনো বিলে রাষ্ট্রপতি অসম্মতি জানাতে পারেন। রাষ্ট্রপতি অসম্মতি জানালে বিলটি বাতিল হয়ে যাবে। রাষ্ট্রপতির এই বিল বাতিলের ক্ষমতাকে ভেটো ক্ষমতা বলে।


ভারতের রাষ্ট্রপতি তিন ধরনের ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেন।
যথা:-

  • রাষ্ট্রপতির পূর্ণাঙ্গ ভেটো।
  • রাষ্ট্রপতির স্থগিতকারী ভেটো।
  • রাষ্ট্রপতির পকেট ভেটো।

রাষ্ট্রপতির পূর্ণাঙ্গ ভেটো (Absolute veto):
তিনটি ক্ষেত্রে ভারতের রাষ্ট্রপতি কর্তৃক পূর্ণাঙ্গ ভেটো ক্ষমতা ব্যবহৃত হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

সংসদে কোনো বেসরকারি বিল পাস হলে রাষ্ট্রপতি মন্ত্রীসভার পরামর্শক্রমে সংশ্লিষ্ট বেসরকারি বিলটির ক্ষেত্রে এই ক্ষমতা প্রয়োগ করে বিলটিকে বাতিল করে দিতে পারেন।


আবার সংসদে কোনো সরকারি বিল গৃহীত হওয়ার পর মন্ত্রীসভা যদি ক্ষমতাচ্যুত হয় বা পদত্যাগ করে তাহলে নতুন মন্ত্রীসভার পরামর্শক্রমে রাষ্ট্রপতি সংশ্লিষ্ট সরকারি বিলটির ক্ষেত্রে পূর্ণাঙ্গ ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগ করে বিলটিকে বাতিল করে দিতে পারেন।


তার সম্মতির জন্য সংরক্ষিত কোনো রাজ্য বিলের ক্ষেত্রেও রাষ্ট্রপতি মন্ত্রীসভার পরামর্শক্রমে এই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে এবং সংশ্লিষ্ট রাজ্য থেকে বাতিল করতে পারেন।


রাষ্ট্রপতির স্থগিতকারী ভেটো (Suspension veto):
সংসদে পাস হওয়া কোনো বিল অনুমোদনের জন্য তার কাছে এলে তিনি সরাসরি সম্মতি না জানিয়ে বা অসম্মতি জ্ঞাপন করে বিলটিকে পুনর্বিবেচনার জন্য সংসদে ফেরত পাঠাতে পারেন। রাষ্ট্রপতির এই ভেটোকে স্থগিতকারী ভেটো বলে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিলটি সংখ্যাগরিষ্ঠ ভেটো পাস হয় আবার যদি রাষ্ট্রপতির কাছে আসে, তখন কিন্তু রাষ্ট্রপতি বিলটিতে সম্মতি জ্ঞাপন করতে বাধ্য।

রাষ্ট্রপতির পকেট ভেটো (Pocket veto): রাষ্ট্রপতি কোনো বিলে সম্মতি বা অসম্মতি জ্ঞাপন না করে বা সংসদে ফেরত না পাঠিয়ে বিলটিকে অনির্দিষ্টকাল চেপে রাখতে পারেন। রাষ্ট্রপতির এই ক্ষমতাকে পকেট ভেটো বলে। তবে সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোটে বিলটি পুনরায় পার্লামেন্টে গৃহীত হলে রাষ্ট্রপতি সম্মতি জানাতে বাধ্য। শ্রীদুর্গাদাস বসু তাঁর Introduction to the Constitution of India গ্রন্থে মন্তব্য করেছেন "The Veto Power of the Indian President is a combination of the Absolute, Suspensive and Pocket Vetos."

0 মন্তব্যসমূহ