বিজয়নগর সাম্রাজ্য: (Vijayanagara Empire).

বিজয়নগর সাম্রাজ্য (১৩৩৬-১৬৪৬ খ্রি.)




বিজয়নগর সাম্রাজ্য হরিহর এবং বুক্কা দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সুলতানি আমলের শেষের দিকে, মুলতান এবং বাংলা ছিল প্রথম অঞ্চল যারা দিল্লি সালতানী সাম্রাজ্য থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে স্বাধীনতা ঘোষণা করে এবং দাক্ষিণাত্য ও দেশের অন্যান্য অনেক অঞ্চল ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়।

• হরিহর এবং বুক্কা ১৩৩৬ খ্রিস্টাব্দে তুঙ্গভদ্রার দক্ষিণ তীরে বিজয়নগরের প্রতিষ্ঠাতা।

• তারা হাম্পিকে রাজধানী করে।

• তারা হোয়সালা রাজা তৃতীয় বিরা বাল্লালার অধীনে কাজ করেছিল।

বিজয়নগর সাম্রাজ্য চারটি গুরুত্বপূর্ণ রাজবংশ দ্বারা শাসিত হয়েছিল: তারা হল:-

• সঙ্গম 
বংশ (১৩৩৬-১৪৮৫ খ্রিঃ)।
• সালুভ 
বংশ (১৪৮৫-১৫০৩ খ্রিঃ)।
• তুলুভ 
বংশ (১৫০৫-১৪৭০ খ্রিঃ)।
• 
আরবিড় বংশ (১৫৭০-১৬৪৫ খ্রিঃ)।

                       সঙ্গম বংশ                      

প্রথম হরিহর (১৩৩৬-৫৬ খ্রিঃ):
প্রথম হরিহর ছিলেন বিজয়নগরের প্রথম শাসক। তিনি হােয়সল রাজা চতুর্থ বল্লালকে ১৩৪৬ খ্রিস্টাব্দে পরাজিত করে বিজয় নগর রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করেন। ১৩৪৭ খ্রিস্টাব্দে তিনি ‘কদম্ব’ নামক এলাকাটি জয় করেন। তিনি নতুন রাজধানী বিজয় (বিদ্যানগর) স্থাপন করেন। বিজয়নগরের পূর্বনাম ছিল বিরূপাক্ষ পট্টন। বিজয়নগরের সামরিক বাহিনীতে হিন্দু – মুসলমান সকল শ্রেণির লােক নিয়ােগ হত। নিজ নামে শাসকরা মুদ্রা ছাপাত। 


দ্বিতীয় হরিহর (১৩৭৭-১৮০৪):
সিংহাসন দখল করার পর তিনি মহারাজাধিকার এবং ‘রাজপরমেশ্বর’ উপাধি নেন। তিনি কাঞ্চি, ত্রিচিলাপল্লি, কানাডা, চিঙ্গলপুটি ইত্যাদি এলাকা জয় করে নিজ সাম্রাজ্যভুক্ত করেন। তিনি ধাবল, ঘুরপতন জয় করেন। তিনি বাহমনি শাসকদের কাছ থেকে বেলগাঁ ও গােয়া জয় করে নিজ রাজ্যভুক্ত করেন। দ্বিতীয় হরিহরের পর বিজয়নগরের সিংহাসনে বসেন যথাক্রমে প্রথম বিরূপাক্ষ, দ্বিতীয় বুক্ক। এই শাসকের শাসনকাল ছিল খুবই কম দিন। উল্লেখযােগ্য কোনাে ঘটনার কথা জানা যায়নি। 
প্রথম দেবরায় (১৪০৬-২২ খ্রিঃ): 
দ্বিতীয় বৃক্কের পর বিজয়নগরের সিংহাসনে বসেন প্রথম দেবরায়। তিনি ফিরােজ শাহকে দশ লক্ষ মুদ্রা, বহু সােনা – মণি – মুক্তা ও হাতি উপহার দেন। আবার ফিরােজ শাহ দেবরায়ের কন্যাকে বিবাহ করেন। ১৪১৯ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ তিনি বাহমনি সুলতানকে পরাজিত করে এই অপমানের প্রতিশােধ নেন। তিনি অশ্বারােহী বাহিনীর উপর জোর দিয়েছিলেন। তিনি জলসেচের জন্য তুঙ্গভদ্রা ও হরিদ্রা নদীতে বাঁধ নির্মাণ করেন। বিখ্যাত গ্রন্থ ‘হরিবিলাসন’ এর লেখক শ্রীনাথ প্রথম দেবরায়ের পৃষ্ঠপােষকতা লাভ করেন। 
দ্বিতীয় দেবরায় (১৪২৩-৪৬ খ্রিঃ): 
ইনি ছিলেন সংম বংশের সর্বশ্রেষ্ঠ শাসক। তিনি উড়িষ্যার গজপতি রাজ্যকে পরাস্ত করে ‘গজবেতকর’ উপাধি নিয়েছিলেন । তিনি অন্ত্রের কন্তাভিদু রাজ্য ও কেরল রাজ্য জয় করেন। কালিকটের ‘জামরিন’ তার অধীনে ছিল। তার দেওয়ান লাকানদানিক শিলভ জয় করেন। তিনি সংস্কৃতে ‘মথনাটক সুধা নিধি’ নাটকটি লেখেন। তিনি সেনাবাহিনীতে মুসলমানদের অন্তর্ভুক্ত করেন। ইতালীয় পর্যটক নিকোলাে কন্টি ও পারসিক রাষ্ট্রদূত আব্দুর রেজ্জাক দ্বিতীয় দেবরায়ের শাসনকালে বিজয়নগর রাজ্যে আসেন। 
মল্লিকার্জুন (১৪৪৬-৫৫ খ্রিঃ):
তার শাসনকালে উড়িষ্যার রাজা বিজয়নগর রাজ্যের উদয়গিরি ও কোণ্ডবিভু আক্রমণ করে দখল করেন। তিনি বাহমনি রাজ্যের মুসলমান শাসকের আক্রমণ প্রতিহত করেন।  

দ্বিতীয় বিরূপাক্ষ(১৪৬৫-৮৫ খ্রিঃ): 
দ্বিতীয় বিরূপাক্ষ মল্লিকার্জুনের ভাই ছিলেন। পাণ্ড্য রাজা বিজয়নগরের কাঞ্চি দখল করেন। বাহমনি শাসক বিরূপক্ষের কাছ থেকে গােয় ছিনিয়ে নেন। অবশেষে চন্দ্রগিরির সামন্ত রাজ নরসিংহ সালুভ ১৪৮৫ খ্রিস্টাব্দে দুর্বল বিরূপাক্ষকে হত্যা করে । সংগম বংশের পতন ঘটান। নরসিংহ সালুভ রাজবংশের শাসনকালের সূচনা করেন। 
                     সালুভ বংশ                       

নরসিংহ সালুভ:
১৪৮৫ খ্রিস্টাব্দ বিজয়নগরের সিংহাসনে বসেন। তিনি গুন্দা সালুভের পুত্র ছিলেন। সংগমবংশীয় রাজা মল্লিকার্জুনের কনিষ্ঠ পুত্র রাজশেখরকে নরসিংহ সালুভ রাজপ্রাসাদে আশ্রয় দেন। রাজশেখর ( ১৪৮৫-৯০ ) অন্ত্র রাজ্য জয় করে শাসন করেন। নরসিংহ সালুভের মৃত্যুর পর তার শিশুপুত্র ইম্মদি নরসিংহকে বিজয়নগরের সিংহাসনে বসিয়ে প্রধানমন্ত্রী নবম নায়ক কার্যত সকল ক্ষমতা দখল করেন। নবম নায়ক ১৪৯০-১৫০৩ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বিজয়নগর রাজ্যের কর্তা ছিলেন। নবম নিজেকে ‘রক্ষাকর্তা’ ও ‘স্বামী’ বলতেন। ১৫০৩ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ নবম নায়কের মৃত্যু হয়। এর পর মাত্র দুই বছর শাসন করেন ইম্মদি নরসিংহ। সালুভ রাজবংশের সেনাপতির ছেলে। বীরসিংহ সালুভ রাজবংশের উচ্ছেদ ঘটিয়ে তুলুভ বংশের শাসন প্রতিষ্ঠা করেন। 



                       তুলুভ বংশ                      

বীরসিংহ(১৫০৫-০৯ খ্রিঃ): 
তিনি সালুভ বংশের শেষ শাসক ইম্মদি নরসিংহকে পরাজিত করে বিজয়নগরের সিংহাসনে বসেন। তিনি অত্যন্ত দয়ালু শাসক ছিলেন এবং তীর্থক্ষেত্রে গিয়ে প্রচুর ধন দৌলত বিতরণ করতেন। পাের্তুগিজ সেনাপতি আলমিদার সঙ্গে চুক্তি করে বিজয়নগরে আরবি ঘােড়া আনার ব্যবস্থা করেন। 

কৃষ্ণদেব রায় (১৫০৯-৩০ খ্রিঃ): 
বীরসিংহের ভাই কৃয়দেব রায় ছিলেন বিজয়নগরের শ্রেষ্ঠ শাসক এবং ভারতের ইতিহাসে অন্যতম শ্রেষ্ঠ রাজা। তিনি ‘যবন রাজ্য পিথনাচ্য’ উপাধি ধারণ করেন। নিজে বৈয়ব ধর্মের উপাসক হলেও তিনি পরধর্ম সহিষু ছিলেন। দুর্বল ও অসহায় ব্যক্তিরা সর্বদা তার করুণা লাভ করত। তিনি সর্বদাই শান্তির প্রতীক সাদা পােশাক পরতেন। বিজয়নগরের শ্রেষ্ঠ নরপতি কৃয়দেব রায়ের রাজসভায় ‘অষ্টদিগজ’ নামে আটজন খ্যাতনামা কবি অলংকৃত করেছিলেন।

                       অষ্টদিগজ                      

আটজন পণ্ডিতের একটি দল তাঁর দরবারে শোভা পেতো এবং তারা ছিল:

• আল্লাসানি পেদ্দান্না :(মনুচরিতরামের লেখক, তিনি অন্ধ্র কবিতাপিতামহ নামেও পরিচিত ছিলেন)।
• নন্দী থিম্মানা :(পারিজাথাপাহারানামের লেখক)।
• মাদায়গাড়ি মাল্লানা।
• ধূর্জটি।
• আয়ালরাজু রামভদ্র কবি।
• পিঙ্গালী সুরানা।
• রামরাজ ভূষণ।
• তেনালি রামকৃষ্ণ।


এদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ ছিলেন অল্লসনি পােদ্দানা, যাকে অন্ত্র কবিতার পিতামহ বলা হয়। পােদ্দানা ছিলেন তার প্রধান সভাকবি। পােদ্দানা রচনা করেন ‘মনুচরিতম’ ও ‘হরিকথা সারাংশম’ গ্রন্থ দুটি। রাজা কৃয়দেব রায় তেলুগু ভাষায় ‘আমুক্ত মাল্যদা’ নামে বিখ্যাত গ্রন্থ রচনা করেন। এছাড়া কৃয়দেব রায় সংস্কৃতে ‘জাম্ববর্তী কল্যাণম’ নামে একটি গ্রন্থ রচনা করেন।  পাের্তুগিজ পর্যটক পায়েজ, নিজ প্রভৃতির বিবরণীতে কৃয়দেব রায় সম্পর্কে প্রচুর প্রশংসা করা হয়েছে। পাের্তুগালের বারবােসা কৃয়দেব রায়ের সময়ে বিজয়নগরে আসেন। কৃষ্ণুদেব রায়ের রাজত্বকালে এসেছিলেন পাের্তুগিজ পর্যটক পায়েজ ও দ্যুনিজ।

            কৃষ্ণদেব রায়ের অবদান:           

একজন দক্ষ প্রশাসক।
• সেচের জন্য বড় বড় ট্যাংক ও খাল নির্মাণ করেন।
• তিনি বৈদেশিক বাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা বুঝে নৌশক্তির বিকাশ ঘটান।
• তিনি পর্তুগিজ ও আরব ব্যবসায়ীদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন।
• তিনি তার সরকারের রাজস্ব বাড়িয়েছেন।
• তিনি শিল্প ও স্থাপত্যের পৃষ্ঠপোষকতা করেছিলেন।
• তাঁর আমলেই বিজয়নগর সাম্রাজ্য গৌরবের শীর্ষে পৌঁছেছিল।
• কৃষ্ণদেব রায় একজন মহান পণ্ডিত ছিলেন।



অচ্যুত রায় (১৫৩০-৪২ খ্রিঃ): 
কৃষ্ণদেব রায়ের পর বিজয়নগরের রাজা হন অচ্যুত রায়। অচ্যুতের আমলে বিজয়নগর রাজ্যের ক্ষয় শুরু হয়। এর পর সিংহাসনে বসেন তার পুত্র প্রথম ভেঙ্কট (১৫৪২ খ্রিঃ)।  

সদাশিব রায় ও রাম রায় (১৫৪৩-৭০ খ্রিঃ): 
তুলুভ বংশের সদাশিব রায় ছিলেন খুবই দুর্বল শাসক। তার দুর্বলতার সুযােগে মন্ত্রী রাম রায় সকল ক্ষমতা কুক্ষিগত করেন। রাম রায় দক্ষিণের রাজ্যগুলিতে আক্রমণের চেষ্টা করেন।


                   আরবিড় বংশ                     

• প্রতিষ্ঠাতা – তিরুমল।
• শেষ শাসক – তৃতীয় শ্রীরঙ্গ।

তিরমুল (১৫৭০-৭২ খ্রিঃ): 
রাম রায়ের ভাই তিরুমল তুলুভ বংশের শেষ রাজা সদাশিব রায়কে সিংহাসনচ্যুত করে সিংহাসন দখল করেন। তিরুমল পেনুগােন্ডা নামক স্থানে রাজধানী স্থাপন করে বিজয়নগরকে নতুন করে তােলার চেষ্টা করেন। তার প্রতিষ্ঠিত বংশ আরবিড় বংশ নামে পরিচিত। এর পর সিংহাসনে বসেন প্রথম শ্রীরঙ্গ (১৫৭২-৮৫ খ্রিঃ)।

দ্বিতীয় ভেঙ্কট (১৫৮৫-১৬১৪ খ্রিঃ): 
প্রথম শ্রীরঙ্গের পর বিজয়নগরের রাজা হন দ্বিতীয় ভেঙ্কট। তিনি তার রাজধানী পেনুগােণ্ডা থেকে চন্দ্রগিরি ও পরে ভেলােরে নিয়ে যান। তিনি তামায়া ও লিঙ্গম বিদ্রোহ দমন করেন। এর পর সিংহাসনে বসেন যথাক্রমে রামদেব রায়, তৃতীয় ভেঙ্কট এবং তৃতীয় শ্রীরঙ্গ। 

• তৃতীয় শ্রীরঙ্গ ছিলেন আরবিড়ু রাজবংশের শেষ রাজা। মােঘলদের শাসনকালে ১৬৪ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ মীরজুমলা বিজয়নগর রাজ্যের ধ্বংস করেন।  

      তালিকোটার যুদ্ধ (১৫৬৫ খ্রি.)        

কৃষ্ণদেব রায়ের উত্তরসূরিরা দুর্বল ছিল।
• আলিয়া রাম রায়ের শাসনামলে আহমেদনগর, বিজাপুর, গোলকুন্ডা এবং বিদারের সম্মিলিত বাহিনী বিজয়নগরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে।
• পরাজিত হলেন আলিয়া রাম রায়। তাকে এবং তার লোকজনকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল।
• বিজয়নগর লুটপাট ও ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়।



       বিজয়নগর সাম্রাজ্যের গৌরব:      

বিজয়নগর সাম্রাজ্যের প্রশাসন:

• সুসংগঠিত প্রশাসনিক ব্যবস্থা।
• রাজা ছিলেন রাজ্যের সকল ক্ষমতার প্রধান।
• মন্ত্রী পরিষদ - রাজাকে প্রশাসনের কাজে সহায়তা করার জন্য।
• সাম্রাজ্য ছয়টি প্রদেশে বিভক্ত ছিল।
• নায়েক – একজন গভর্নর যিনি প্রতিটি প্রদেশ পরিচালনা করতেন।
• প্রদেশগুলিকে জেলায় বিভক্ত করা হয়েছিল এবং জেলাগুলিকে আবার ছোট ছোট ইউনিটে বিভক্ত করা হয়েছিল, নাম গ্রাম।
• গ্রামটি বংশানুক্রমিক কর্মকর্তা যেমন হিসাবরক্ষক, প্রহরী, ওজনদার এবং বাধ্যতামূলক শ্রমের দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের দ্বারা পরিচালিত হত।
• মহানায়কাচার্য: তিনি একজন আধিকারিক এবং গ্রাম ও কেন্দ্রীয় প্রশাসনের মধ্যে যোগাযোগ বিন্দু



বিজয়নগর সাম্রাজ্যের সশস্ত্র বাহিনী:

• সেনাবাহিনী পদাতিক, অশ্বারোহী এবং হাতি বাহিনী নিয়ে গঠিত।
• সেনাপতির দায়িত্বে ছিলেন সেনাপতি।




বিজয়নগর সাম্রাজ্যের রাজস্ব প্রশাসন:

• ভূমি রাজস্ব ছিল আয়ের প্রধান উৎস।
• জমিটি যত্ন সহকারে জরিপ করা হয়েছিল এবং মাটির উর্বরতার উপর ভিত্তি করে কর আদায় করা হয়েছিল।
• কৃষিতে এবং বাঁধ ও খাল নির্মাণে প্রধান গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল।


বিজয়নগর সাম্রাজ্যের বিচার ব্যবস্থা:

• রাজা ছিলেন সর্বোচ্চ বিচারক।
• দোষীদের কঠোর শাস্তির বিধান করা হয়েছে।
• যারা আইন লঙ্ঘন করেছে তাদের কাছ থেকে আদায় করা হয়েছে।



বিজয়নগর সাম্রাজ্যের নারীর অবস্থান:

• মহিলারা একটি উচ্চ পদে অধিষ্ঠিত এবং সাম্রাজ্যের রাজনৈতিক, সামাজিক এবং সাহিত্যিক জীবনে সক্রিয় অংশ নিয়েছিল।
• তারা কুস্তি, অপরাধ ও প্রতিরক্ষার বিভিন্ন অস্ত্র ব্যবহার, সঙ্গীত ও চারুকলায় শিক্ষিত ও প্রশিক্ষিত ছিল।
• কিছু মহিলা উচ্চ মানের শিক্ষাও পেয়েছিলেন।
• নুনিজ লিখেছেন যে রাজাদের মহিলা জ্যোতিষী, কেরানি, হিসাবরক্ষক, প্রহরী এবং কুস্তিগীর ছিল।



বিজয়নগর সাম্রাজ্যের সামাজিক জীবন:

• সমাজ ব্যবস্থা করা হয়েছিল।
• বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ ও সতীদাহ প্রথা প্রচলিত ছিল।
• রাজারা ধর্মের স্বাধীনতা দিতেন।



বিজয়নগর সাম্রাজ্যের অর্থনৈতিক অবস্থা:

• তাদের সেচ নীতি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।
• বস্ত্র, খনি, ধাতুবিদ্যা সুগন্ধি, এবং অন্যান্য বিভিন্ন শিল্প বিদ্যমান ছিল।
• ভারত মহাসাগরের দ্বীপ, আবিসিনিয়া, আরব, বার্মা, চীন, পারস্য, পর্তুগাল, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং মালয় দ্বীপপুঞ্জের সাথে তাদের বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিল।



বিজয়নগর সাম্রাজ্যের স্থাপত্য ও সাহিত্যে অবদান:

• হাজরা রামাসামি মন্দির এবং বিট্টলস্বামী মন্দির এই সময়ে নির্মিত হয়েছিল
• কৃষ্ণদেব রায়ের ব্রোঞ্জ মূর্তি একটি মাস্টারপিস।
• সংস্কৃত, তামিল, তেলেগু ও কন্নড় সাহিত্যের বিকাশ ঘটে।
• সায়ানা বেদের ভাষ্য লিখেছেন।
• কৃষ্ণদেবরায় তেলুগুতে অমুক্তমাল্যদা এবং সংস্কৃতে উষা পরিণায়াম এবং জাম্ববতী কল্যাণম লিখেছেন।


বিজয়নগর সাম্রাজ্যের সাম্রাজ্যের পতন:

• আরাভিদু রাজবংশের শাসকরা ছিল দুর্বল ও অযোগ্য।
• অনেক প্রাদেশিক গভর্নর স্বাধীন হয়েছিলেন।
• বিজাপুর ও গোলকুণ্ডার শাসকরা বিজয়নগরের কিছু এলাকা দখল করে নেয়।

0 মন্তব্যসমূহ