সংবিধান হল রাষ্ট্র পরিচালনার মৌলিক দলিল। যেসব নিয়মের মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালিত হয় তাকে সংবিধান বলে। আর প্রত্যেক দেশের সংবিধানের কতকগুলি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য থাকে। এই বৈশিষ্ট্যগুলি থেকেই দেশের সংবিধানের যথার্থ স্বরূপ অণুধাবন করা যায়।
ভারতের সংবিধানের বৈশিষ্ট্য
👉বৃহত্তম সংবিধান :-
ভারতীয় সংবিধান হল বিশ্বের সর্ববৃহৎ লিখিত সংবিধান। ১৯৫০ সালে ২৬ জানুয়ারি ভারতীয় সংবিধান যখন কার্যকর হয় সেই সময় ৩৯৫টি ধারা এবং ৮টি তালিকা নিয়ে ভারতীয় সংবিধান রচিত হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে সংবিধান সংশোধিত হয়ে বর্তমানে ৪৭০ টি ধারা ও ১২টি তফশিলি তালিকা ও বিভিন্ন উপধারা রয়েছে।
👉লিখিত ও অলিখিত সংবিধানের সংমিশ্রণ :-
👉লিখিত ও অলিখিত সংবিধানের সংমিশ্রণ :-
ভারতীয় সংবিধান মূলত লিখিত। কিন্তু এর কিছু অলিখিত অংশ রয়েছে। ব্রিটেনের শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতির আদলে ভারতীয় সংবিধানে প্রথা, রীতিনীতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে।
👉সুপরিবর্তনীয় ও দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধানের সংমিশ্রণ :-
👉সুপরিবর্তনীয় ও দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধানের সংমিশ্রণ :-
ভারতের সংবিধানে সুপরিবর্তনীয় এবং দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধানের বৈশিষ্ট্যগুলির সম্বয় সাধন করা হয়েছে।তিনটি পদ্ধতির মাধ্যমে ভারতীয় সংবিধান সংশোধন করা যায়।
👉সংবিধানের প্রাধান্য :-
- সংবিধানের কিছু অংশ সাধারন আইন প্রণয়ন পদ্ধতিতে পরিবর্তন করা যায়।
- সংবিধানের কিছু অংশ পরিবর্তন করতে গেলে কেন্দ্রীয় আইনসভার উভয় কক্ষের মোট সদস্যদের অধিকাংশ এবং উপস্থিত ও ভোটদানকারী সদস্যদের দুই তৃতীয়াংশের অনুমোদন প্রয়োজন।
- সংবিধানের কিছু কিছু অংশ পরিবর্তন করতে গেলে প্রথমে দ্বিতীয় পদ্ধতি অণুসরন করতে হয় এবং তারপর এই প্রস্তাবটি রাজ্যগুলির আইনসভার সম্মতি লাভের জন্য প্রেরণ করতে হয়। দ্বিতীয় ও তৃতীয় পদ্ধতি দুষ্পরিবর্তনীয় বলা চলে।
👉সংবিধানের প্রাধান্য :-
ভারতীয় সংবিধানে সাংবিধানিক প্রাধান্য স্বীকৃতি হয়েছে, রাষ্ট্রের সর্ব্বোচ্চ আইন হল সংবিধান যাবতীয় রাষ্ট্রের ক্ষমতা এবং নাগরিকদের মৌলিক অধিকারের উৎস হল সংবিধান।কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার সমূহ বিচার বিভাগ, আইন বিভাগ এবং দেশের সমস্ত প্রতিষ্ঠান এবং নাগরিক বৃন্দ সবাইকে সংবিধানের অধীনে থেকে কাজকর্ম করতে হয়। এই জন্য সংবিধান বিরোধী কোন আইন আদেশ ও নির্দেশ জারি করলে সুপ্রিমকোর্ট তা বাতিল করে দিতে পারে।
👉যুক্তরাষ্ট্রীয় ও এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থার সংমিশ্রণ :-
👉যুক্তরাষ্ট্রীয় ও এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থার সংমিশ্রণ :-
ভারতীয় সংবিধানে কোথাও ‘যুক্তরাষ্ট্র’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়নি, তবুও ভারতে যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি মূল বৈশিষ্ট্য ভারতে বর্তমান যেমন-
- লিখিত সংবিধানের অবস্থিতি।
- কেন্দ্র ও রাজ্যসরকারগুলির মধ্যে ক্ষমতার বণ্টন।
- নিরপেক্ষ যুক্তরাষ্ট্রীয় আদালতের অবস্থিতি।
👉👉👉 এখানে ক্লিক করুন ⤵️
ভারতের সংবিধান: অনলাইন মক টেস্ট;ভারতের যুক্তিরাষ্ট্রের প্রকৃতি বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে ভারত আকৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রীয় হলেও প্রকৃতিতে এককেন্দ্রিক, ক্ষমতার বন্টনের ব্যাপারে কেন্দ্রীয় প্রাধান্য স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে, তাই কে.সি হোয়ার ভাতীয় সংবিধানকে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিম বলে অভিহিত করেছেন।
👉সংসদীয় শাসন ব্যবস্থা :-
ভারতীয় সংবিধানে সংসদীয় শাসনব্যবস্থা গৃহীত হয়েছে। ব্রিটিশ সংবিধানের অণুকরণে গৃহীত এই ব্যবস্থায় রাষ্ট্রের সর্বময় কর্তৃত্ব তত্ত্বগতভাবে রাষ্ট্রপতির হাতে থাকলেও কার্যত যাবতীয় ক্ষমতার অধিকারী হলেন পার্লমেন্টের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতৃত্বাধীন মন্ত্রীসভা। মন্ত্রীসভা তার কাজকর্মের জন্য পার্লামেন্ট বা সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভার নিকট দায়বদ্ধ থাকতে হয়। লোকসভার আস্থা হারালে সমগ্র মন্ত্রীসভার পদত্যাগ করতে হয়।
👉বিচার বিভাগের স্বাধীনতা :-
👉বিচার বিভাগের স্বাধীনতা :-
ভারতের বিচার বিভাগ যাতে নিরপেক্ষ ও স্বাধীনভাবে নিজের দায়িত্ব সম্পাদন করতে পারে তার জন্য সংবিধানে বিচার বিভাগীয় স্বাধীনতার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সংবিধান বিচারপতিদের নিয়োগ, সুযোগ-সুবিধা কার্যকাল ইত্যাদি ব্যাপারে বিচার বিভাগ বিশেষ প্রাধান্য দিয়েছে।
👉সর্বজনীন প্রাপ্তবয়স্ক ভোটাধিকার :-
👉সর্বজনীন প্রাপ্তবয়স্ক ভোটাধিকার :-
ভারতের সংবিধানে সর্বজনীন প্রাপ্তবয়স্কের ভোটাধিকারকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। মূল সংবিধানের ৩২৫ ও ৩২৬ নং ধারায় জাতি, ধর্ম, বর্ণ, স্ত্রী পুরুষ, সম্পত্তি নির্বিশেষে ২১ বছর বয়স্ক প্রতিটি ভারতীয় নাগরিককে ভোটাধিকার প্রদান করা হয়। ১৯৮৯ সালে ৬১-তম সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে বয়সসীমা ১৮ বছর করা হয়েছে।
ভারতীয় সংবিধানের বৈশিষ্ট্যগুলি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, সংবিধান প্রণেতাগণ ভারতকে একটি ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদী আদর্শের সঙ্গে সামাজিক কল্যাণ আদর্শের সমন্বয় সাধনের মধ্য দিয়ে একটি জনকল্যাণকামী রাষ্ট্র হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করার প্রচেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু এ.আর.দেশাই এর মতে ভারতের জনকল্যাণকামী রাষ্ট্র নাগরিকদের ন্যূনতম নিরাপত্তা প্রদান করতে ব্যর্থ হয়েছে। তবে ভারতীয় সংবিধানের কতকগুলি বিশেষ বৈশিষ্ট্য একে অন্যান্য সংবিধান থেকে স্বাতন্ত্রতা প্রদান করেছে।
ভারতীয় সংবিধানের বৈশিষ্ট্যগুলি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, সংবিধান প্রণেতাগণ ভারতকে একটি ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদী আদর্শের সঙ্গে সামাজিক কল্যাণ আদর্শের সমন্বয় সাধনের মধ্য দিয়ে একটি জনকল্যাণকামী রাষ্ট্র হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করার প্রচেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু এ.আর.দেশাই এর মতে ভারতের জনকল্যাণকামী রাষ্ট্র নাগরিকদের ন্যূনতম নিরাপত্তা প্রদান করতে ব্যর্থ হয়েছে। তবে ভারতীয় সংবিধানের কতকগুলি বিশেষ বৈশিষ্ট্য একে অন্যান্য সংবিধান থেকে স্বাতন্ত্রতা প্রদান করেছে।
0 মন্তব্যসমূহ