'ভারতের কৃষি' সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর:(Agriculture of India).

১. ভারতের কয় ধরনের কৃষি দেখা যায়?

উঃ তিন ধরনের।

২. খারিফ শস্যের সময় কি?

উঃ জুলাই-আগস্টে বপন করা হয় আর সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে ফসল তোলা হয়।

৩. খারিফ শস্য গুলি কি কি?

উঃ ধান, জোয়ার, বাজরা, রাগি, ভুট্টা, পাট ও তুলা।

৪. রবি শস্যের সময় কি?

উঃ অক্টোবর-ডিসেম্বরে বপন করা হয় এবং এপ্রিল-মে মাসে ফসল তোলা হয়।

৫. রবিশস্য গুলি কি কি?

উঃ গম, বার্লি,মটর, রেপশীড,সরষে ।

৬.  জায়েদ শস্য সময় কি?

উঃ এপ্রিল থেকে জুন মাসের মধ্যে ফসল ফলানো হয়।

৭. জায়েদ শস্য গুলি কি কি?

উঃ তরমুজ শসা ও নানা শাকসবজি।

৮. স্থানান্তর কৃষি কাকে বলে?

উঃ যে প্রাচীনপন্থী কৃষি ব্যবস্থায় ক্রান্তীয় বনভূমিতে বসবাসকারী যাযাবর উপজাতি গোষ্ঠীর লোকেরা বন জঙ্গল কেটে ও পুড়িয়ে অত্যন্ত প্রাচীন ও অনুন্নত প্রথায় স্থান থেকে স্থানান্তরে গমনের মাধ্যমে কৃষিকাজ করে, তাকে স্থানান্তর কৃষি বলে।

৯. ভারতে কোন কোন অঞ্চলে স্থানান্তর কৃষি লক্ষ্য করা যায়?

উঃ আসাম, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, মণিপুর, ত্রিপুরা, মিজোরাম, অরুণাচল প্রদেশ, ওড়িশা, মধ্যপ্রদেশ, ঝাড়খন্ড, এবং অন্ধ্রপ্রদেশ।

১০. আসামের স্থানান্তর কৃষি কে কি বলা হয়?

উঃ ঝুম চাষ।

১১. কেরালায় স্থানান্তর কৃষি কে কি বলা হয়?

উঃ পোনম।

১২. অন্ধ্র প্রদেশ ও উড়িষ্যা স্থানান্তর কৃষি কে কি বলা হয়?

উঃ পডু।

১৩. মধ্যপ্রদেশের স্থানান্তর কৃষি কে কি বলা হয়?

উঃ বিয়ার, মাশান, পেন্ডা, বীরা।

১৪. নিবিড় কৃষি কাকে বলে?

উঃ বিশ্বের যে সমস্ত অঞ্চলে জনঘনত্ব বেশি, জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার দ্রুত, শ্রমিক সস্তা ও সহজলভ্য এবং কৃষি জমির পরিমাণ সীমিত, সেখানে জীবিকা নির্বাহ ও জীবন ধারণের জন্য গড়ে ওঠা শ্রম নিবিড় কৃষি ব্যবস্থাকে প্রগাঢ় কৃষি বা নিবিড় কৃষি বলে। 

১৫. ব্যাপক কৃষি কাকে বলে?

উঃ  বিশ্বের যে সমস্ত অঞ্চলে জনসংখ্যা ও জনঘনত্ব কম এবং কৃষি জমির পরিমাণ বেশি, সেখানে প্রচুর মূলধন,ন্যূনতম শ্রম ও কারিগরি কৌশলের সাহায্যে যে বৃহদায়তন কৃষি ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়, তাকে ব্যাপক কৃষি বলে।

১৬. মিশ্র কৃষি কাকে বলে?

উঃ যে কৃষি ব্যবস্থায় অনুকূল প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক পরিবেশ একই কৃষি খামারের কৃষিজ ফসল উৎপাদনের পাশাপাশি পশু পালন করা হয়, সেই অপেক্ষাকৃত ঝুঁকিবিহীন বাজার কেন্দ্রিক কৃষি ব্যবস্থাকে মিশ্র কৃষি বলে।

১৭. সবুজ বিপ্লব কাকে বলে?

উঃ স্বাধীনতা লাভের পরবর্তী সময়ে ভারতে কৃষিবিজ্ঞানী নরম্যান বোরলগ ও ভারতীয় কৃষিবিজ্ঞানীদের সহায়তায় কৃষিতে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি সবুজ বিপ্লব নামে পরিচিত।

১৮. কয়েকটি বাগিচা ফসলের নাম লেখ।


উঃ চা, কফি, রবার।

১৯. ভারতের প্রধান খাদ্যশস্য কী?

উঃ ধান।

২০. ধান উৎপাদনে পৃথিবীতে ভারতের স্থান কী?

উঃ দ্বিতীয়।

২১. কী ধরণের মাটি ধান চাষের পক্ষে উপযোগী?

উঃ উর্বর দোঁয়াশ মাটি এবং নদী উপত্যকার পলিমাটি।

২২. ধান চাষের জন্য কত সেমি বৃষ্টিপাতের প্রয়োজন?

উঃ ১০০ সেমি থেকে ২০০ সেমি।

২৩. কত ডিগ্রী তাপমাত্রা ধান চাষের পক্ষে উপযোগী?

উঃ ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

২৪. আমন ধান কোন সময়ে ভারতে চাষ হয়?

উঃ বর্ষাকালে লাগানো হয় ও শীতকালে কাটা হয়।

২৫. আমন ধানকে ‘আঘায়নি’ বলা হয় কেন?

উঃ অগ্রহায়ণ মাসে কাটা হয় বলে।

২৬. আউশ ধান ভারতে কোন সময়ে চাষ করা হয়?

উঃ শ্রীষ্মকালে কালবৈশাখীর বৃষ্টিতে লাগানো হয় এবং ভাদ্র-আশ্বিন মাসে কাটা হয়।

২৭. বোরো ধান কোন সময়ে কাটা হয়?

উঃ গ্রীষ্মকালে।

২৮. ধান উৎপাদনে কোন রাজ্য ভারতে প্রথম স্থান অধিকার করে?

উঃ পশ্চিমবঙ্গ।

২৯. ভারতে হেক্টর প্রতি ধানের উৎপাদন কত?

উঃ হেক্টর প্রতি ১,৯২১ কিগ্রা।

৩০. ভারতে ধান গবেষণাগারটি কোথায় অবস্থিত?

উঃ উড়িষ্যার কটকে।

৩১. কয়েকটি উচ্চ ফলনশীল বীজের নাম লেখ।

উঃ জয়া, রত্না, তাইচুং, বিজয়া, গোবিন্দ প্রভৃতি।

৩২. গম উৎপাদনে ভারতের কোন রাজ্য প্রথম স্থান অধিকার করে?

উঃ উত্তরপ্রদেশ।

৩৩. ভারতের গম গবেষণাগার কেন্দ্রটি কোথায় অবস্থিত?

উঃ দিল্লীর কাছে পুষায়।


৩৪. কয়েকটি উচ্চ ফলনশীল গম বীজের নাম লেখ।

উঃ সোনালিকা, সোনা-২২৭, কল্যাণ-সোনা, লারমা রাজো ইত্যাদি। ।

৩৫. গম উৎপাদনের জন্য কী পরিমাণ উত্তাপ প্রয়োজন?

উঃ গড়ে ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

৩৬. গম উৎপাদনের জন্য কী পরিমাণ বৃষ্টিপাত প্রয়োজন?

উঃ ৫০ সেমি থেকে ১০০ সেমি।

৩৭. কী ধরণের মাটিতে গম চাষ ভাল হয়?

উঃ উর্বর দোঁয়াশ মাটি।

৩৮. মিলেটস কী?

উঃ জোয়ার, বাজরা, রাগী প্রভৃতি দানা শস্যকে মিলেটস বলে।

৩৯. জোয়ার উৎপাদনে ভারতের কোন রাজ্য প্রথম স্থান অধিকার করে?

উঃ মহারাষ্ট্র।

৪০. বাজরা উৎপাদনে ভারতের কোন রাজ্য প্রথম স্থান অধিকার করে?

উঃ রাজস্থান।

৪১. রাগী উৎপাদনে ভারতের কোন রাজ্য প্রথম স্থান অধিকার করে?

উঃ কর্নাটক।

৪২. ভারতের দুটি প্রধান তন্তুশস্যের নাম লেখ।

উঃ তুলো, পাট।

৪৩. সোনালী আঁশ কাকে বলে?

উঃ পাটকে।


৪৪. পাট চাষের জন্য কী পরিমাণ উষ্ণতা প্রয়োজন?

উঃ ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

৪৫. পাট চাষের জন্য কী পরিমাণ বৃষ্টিপাতের প্রয়োজন?

উঃ ১৫০ সেমি থেকে ২০০ সেমি।

৪৬. পৃথিবীর মধ্যে কোথায় সবচেয়ে ভাল পাট চাষ হয়?

উঃ গঙ্গা ব্রহ্মপুত্রের ব-দ্বীপ অঞ্চলে।

৪৭. ভারতের কোন রাজ্য পাট উৎপাদনে প্রথম স্থান অধিকার করে?

উঃ পশ্চিমবঙ্গ।

৪৮. কয়েকটি উচ্চ ফলনশীল পাট বীজের নাম লেখ।

উঃ জে আর সি -২১২, জে আর সি -৩২১, জে আর ও – ৬২০।

৪৯. চা উৎপাদনে পৃথিবীতে ভারতে স্থান কত?

উঃ প্রথম

৫০. চা চাষের জন্য কী পরিমাণ উষ্ণতার প্রয়োজন?

উঃ ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

৫১. কী পরিমাণ বৃষ্টিপাত চা চাষের উপযোগী?

উঃ ১৫০সেমি থেকে ২৫০ সেমি।

৫২. কোন রাজ্য ভারতে চা উৎপাদন করে?

উঃ অসম।

৫৩. ভারত কোন কোন দেশে চা রপ্তানি করে?

উঃ রাশিয়া, ব্রিটিশ যুক্তরাজ্য, ইরাক, ইরাণ প্রভৃতি দেশে।

৫৪. ভারতের কোন বন্দরের মাধ্যমে সর্বাধিক চা রপ্তানি হয়?

উঃ কলকাতা বন্দরের মাধ্যমে।

৫৫. কফি চাষের জন্য কী পরিমাণ উষ্ণতা ও বৃষ্টিপাত প্রয়োজন?

উঃ ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস উষ্ণতা এবং ১৫০ সেমি থেকে ২০০ সেমি বৃষ্টিপাত।

৫৬. কফি চাষের জন্য কোন ধরণের মাটি আদর্শ?

উঃ লাভা সৃষ্ট উর্বর মাটি বা লাল মাটি বা ল্যাটেরাইট মাটি।

৫৭. ভারতে কত ধরণের কফি উৎপন্ন হয় ও কী কী?

উঃ দুই ধরণের। যথা আরবীয় কফি ও রোবাস্ট্রা কফি।

৫৮. ভারতের কোন রাজ্য কফি উৎপাদনে প্রথম স্থান অধিকার করেছে?

উঃ কর্ণাটক।

৫৯. ভারত কোন কোন দেশে কফি রপ্তানি করে?

উঃ আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র, ফান্স, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া প্রভৃতি দেশে।

৬০. কী ধরণের বৃষ্টিপাত এবং উষ্ণতা আখ চাষের উপযোগী?

উঃ গড়ে ১৫০ সেমি বৃষ্টিপাত এবং ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস উষ্ণতা প্রয়োজন।

৬১. কী ধরণের ভূমিতে আখ চাষ ভাল হয়?

উঃ উত্তম জলনিকাশী ব্যবস্থাযুক্ত সমতলভূমিতে।

৬২. ভারতে কেন্দ্রীয় আখ গবেষণাগার কোথায় অবস্থিত?

উঃ উত্তরপ্রদেশের লক্ষনৌতে।

৬৩. কোন জাতীয় মাটিতে তুল চাষ ভাল হয়?

উঃ চুন মেশানো উর্বর দোঁয়াশ মাটি বা কৃষ্ণ মৃত্তিকায়।


৬৪. কী পরিমাণ উত্তাপ তুলো চাষের পক্ষে আদর্শ?

উঃ ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

৬৫. তুলো চাষের জন্য কত বৃষ্টিপাত প্রয়োজন?

উঃ ৫০ সেমি থেকে ১০০ সেমি।

৬৬. ভারত কোন কোন দেশে তুলো রপ্তানি করে?

উঃ জাপান, জার্মানি প্রভৃতি দেশে।

৬৭. কয়েকটি উচ্চ-ফলনশীল তুলোবীজের নাম লেখ?

উঃ সুজাতা, এম সি ইউ -৫, এম সি ইউ -৪।

৬৮. তেলবীজ কাকে বলে?

উঃ যেসব বীজ থেকে তেল নিষ্কাষণ করা হয় সেগুলিকে বলে তেলবীজ

৬৯. তেলবীজ কত ধরণের ও কী কী?

উঃ দুই ধরণের। যথা –ভক্ষ্য তেলবীজ এবং অভক্ষ্য তেলবীজ।

৭০. কয়েকটি ভক্ষ্য তেলবীজের উদাহরণ দাও।

উঃ সরষে, তিল, চিনাবাদাম, নারিকেল।

৭১. দুটি অভক্ষ্য তেলবীজের উদাহরণ দাও।

উঃ তিসি এবং রেড়ি।


৭২. অর্থকরী ফসল বলতে কী বোঝ?

উঃ যেসব ফসল বিদেশে রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জুন করা হয় তাদের অর্থকরী ফসল বলে। যেমন পাট, তুলো, আখ, তামাক।

৭৩. ভারতের দুটি প্রধান অর্থকরী ফসলের নাম লেখ।

উঃ তুলো, পাট।

৭৪. দক্ষিণ ভারতের একটি অর্থকরী ফসলের নাম লেখ।

উঃ আখ। 

৭৫. বাণিজ্য ফসল কাকে বলে?

উঃ প্রধানত রপ্তানি বা বাণিজ্যের জন্য যেসব ফসল উৎপাদন করা হয় সেগুলিকে বাণিজ্য ফসল বলে।


0 মন্তব্যসমূহ